ঝুলন যাত্রা ২০২০

ঝুলন যাত্রা ২০২০

 

ঝুলন পূর্ণিমা হল শ্রীকৃষ্ণের অনুগামীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। অমাবস্যায় পরের একাদশী থেকে আরম্ভ করে শ্রাবনী পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে উৎসবের সমারোহ। এটি দোল পূর্ণিমার পরবর্তী বৈষ্ণবদের বড়ো উৎসব। দোলনা সাজানো, ভক্তিমূলক গান, নাচ, সব মিলিয়ে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলার এটি একটি বিশেষ উৎসব। ভারতের এই উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে বহু দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। নবদ্বীপে ঝুলন উৎসব একটি বিশেষ আকর্ষণ। বৃন্দাবন, মথুরা আর ইসকন মন্দিরে মহা সমারোহে পালিত হয় এই ঝুলন। এই উৎসব সাধারণত শ্রাবণ মাসেই হয়ে থাকে।

আমরা সাধারণত ভগবান শ্রীকৃ্ষ্ণের ১২ টি যাত্রার কথা শুনে থাকি। কিন্তু এর মধ্যে বিশেষ কয়েকটি যাত্রা হচ্ছে রথযত্রা, দোলযাত্রা, স্নানযাত্রা , ঝুলনযাত্রা ইত্যাদি।শ্রাবন মাসের একাদশী তিথি থেকে শুরু হয় এই যাত্রা। শেষ হয় রাখী পূর্ণিমা তে।

ঝুলনযাত্রা কি

শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তে এই ঝুলন যাত্রা হয়ে থাকে তাই একে শ্রাবণী পূর্ণিমা বলা হয়ে থাকে। দ্বাপর যুগে বৃন্দাবনে রাধা কৃ্ষ্ণের প্রেম লীলার মাধ্যমে শুরু হয়েছিলো এই ঝুলন যাত্রা। যা যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে।বৃন্দাবনের কুঞ্জবনে রাধা কৃ্ষ্ণের বিশুদ্ধ প্রেমের যে আদান প্রদান হয়েছে তার ই লীলা স্বরুপ ভক্তেরা এই ঝুলনযাত্রা পালন করে থাকে।ঝুলনযাত্রার ভগবানের সেই লীলার বিভিন্নরুপ প্রকাশিত হয়।

ঝুলন যাত্রা শুরু হয় শ্রাবন মাসের একাদশী থেকে।ভগবান এই পাঁচদিন দোলনায় উপবেশন করেন তার ভক্তিরসের আধার আহ্লাদিনী শ্রী রাধার সঙ্গে। ভগবান শ্রী কৃ্ষ্ণ হচ্ছেন পরা প্রকৃ্তি তথা পুরুষোত্তম আর শী রাধা হচ্ছে অপরা প্রকৃ্তি ভক্তি স্বরুপিনী। আমরা ভক্তরা সেই রাধা ভাবে ঈশ্বরের সহচর্য লাভ করতে ব্যাকুল।

ঝুলনের নিয়ম

কিছু কিছু নিয়মের কখনোই কোন পরিবর্তন হয় না। যাহা ধ্রুবকের মত। তেমনে ভক্তের ও ভগবানের বিশুদ্ধ প্রেমের কোন পরিবর্তন নেই প্রকৃ্তির নিয়ম মেনে সূ্র্যোদয় এবং সূ্র্যাস্ত হয়। ভগবান ও ভক্তের প্রেম ও এমন শাশ্বত নিয়ম মেনে দোলনা পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে দোলানো হয়। অনেকটা পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারনে দিন ও রাতের মতই ঈশ্বর ও জীবের অস্তিত্ব কে স্বীকার করা হয়। একই ভাবে পৃ্থিবীর বার্ষিক গতির নিয়ম মেনে উত্তর থেকে দক্ষিনে যা সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ণকে বোঝায়।

আগামী ৩০ জুলাই ২০২০ তারিখে একাদশী তিথি তে শুরু হবে এই ঝুলণযাত্রা। চলবে পূর্ণিমা পর্যন্ত।