দীপাবলি কথাটি এসেছে” দীপ” এবং “ওয়ালি”এই দুই শব্দের সন্ধি করে। দীপ কথার অর্থ প্রদীপ এবং ওয়ালি কথার অর্থ সারি ।অর্থাৎ দীপাবলি কথার অর্থ প্রদীপের সারি । সারি সারি প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ির এবং চারপাশের সকল অন্ধকার দূর করা হয় এই উৎসব উপলক্ষে। দীপাবলি উত্তর ভারতে শরৎ আর দক্ষিণ ভারতে বসন্তকালে অনুষ্ঠিত হয়। সারা ভারতে এক দিন নয়, পাঁচ দিন ধরে পালিত হয় এই উৎসব। ধনতেরাস, নরক চতুর্থী, অমাবস্যা, কার্তিক শুদ্ধ পদ্যমী বা বালি প্রতিপদা এবং ভাই দুঁজ বা ভাইফোঁটা।
দীপাবলি আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন উৎসব। মহাভারতের যুগেও এই উৎসব ছিল। তারও পূর্বে রামায়ণের কাল থেকে জানা যায়, শ্রীরামচন্দ্র চোদ্দ বছর বনবাসের পরে দেশে ফেরার সময়ে রাজ্যবাসী প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসব পালন করেছিলেন। যদিও ঐ প্রদীপ জ্বালানোর সূচনা হয়েছিল অযোধ্যায় শ্রীরামচন্দ্রের জন্মদিন উপলক্ষে। আবার রাম-রাবণের যুদ্ধে রামের জয়ের সংবাদে অযোধ্যায় দীপাবলি উৎসব পালন করা হয়েছিল। আজও তাই উত্তর ভারতের মানুষ দীপাবলির উৎসব পালন করে থাকেন।
সারা ভারত তথা বিশ্বজুড়ে পালিত হয় দীপাবলি উৎসব। এই উৎসব প্রত্যেক হিন্দু বাড়িতে মহা ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয়। এছাড়াও সমগ্র ভারত জুড়ে ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে এই উৎসব পালন করে থাকে। এই উৎসব কোন একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের উৎসব না থেকে থেকে বর্তমানে একটি “আন্তর্জাতিক” উৎসবে পরিণত হয়েছে, যেখানে বিশ্বের প্রায় সকল দেশ ধুমধামের সঙ্গে এই উৎসব পালন করে থাকে। সকল ভারতবাসীর কাছে তথা বিশ্ববাসীর কাছে দীপাবলি হল আলোর উৎসব।
বাৎস্যায়নের ‘কামসূত্র’ গ্রন্থে প্রথম দীপাবলির উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে একে যমরাত্রি বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বৃন্দাবনে ব্রজবালারা দীপান্বিতা অমাবস্যায় গিরিরাজ গোবর্ধনের পুজো করে বৃন্দাবনকে দীপমালায় শোভিত করেছিল। এই বর্ণনা রয়েছে ‘শ্রীমদ্ভাগবত’-এ। শ্রীহর্ষ তাঁর ‘নাগানন্দ’ গ্রন্থে একে উল্লেখ করেছেন ‘দীপ প্রতিপাদ্য’ উৎসব হিসেবে। আলবিরুনি তাঁর ‘তাহকক ই হিন্দ’ গ্রন্থে একে ‘দীপাবলি’ বলেই বর্ণনা করেছেন।
সোর্সঃ ইন্টারনেট