আমরা যে কারণে জগদ্ধাত্রী পূজা করি! পর্ব -২

তিনি সিংহবাহিনী, তবে দুর্গার মতো জগদ্ধাত্রী দশভূজা নন চতুর্ভুজা, নানা আভরণভূষিতা, অরুণকিরণবৎ বর্ণযুক্তা এবং সর্পরূপ যজ্ঞোপবীতধারিণী। তাঁর বাম দিকের দুহাতে থাকে শঙ্খ ও ধনু এবং ডান দিকের দুহাতে থাকে চক্র ও পঞ্চবাণ।

রক্তবর্ণের বস্ত্র তাঁর পরিধানে। তিনি সত্ত্বগুণের প্রতীক, তাই প্রথম সূর্যের মতো তাঁর গায়ের রং। অর্থাৎ, দেবীর গাত্রবর্ণটি কমলা। কিন্তু, দুর্গার সঙ্গে তাঁর সংযোগ স্থাপন করে বর্তমানে তাঁর মূর্তিটি নির্মাণ করা হয় তা হল তপ্তকাঞ্চনবর্ণ বা কাঁচা সোনার রঙে।

কমলা রঙের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা বর্তমানে এই বঙ্গে দুর্লভ। বাহন সিংহ করীন্দ্রাসুর অর্থাৎ হস্তীরূপী অসুরের পৃষ্ঠে দণ্ডায়মান। কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু বাঙালির ধর্মীয় মানসে রাজসিক দেবী দুর্গা ও তামসিক কালীর পরেই স্থান সত্ত্বগুণের দেবী জগদ্ধাত্রীর।

নারদাদি মুনিগণ তাঁর নিত্যসেবা করে থাকেন-

“সিংহস্কন্ধসমারূঢ়াং নানালঙ্কারভূষিতাম্

চতুর্ভুজাং মহাদেবীং নাগযজ্ঞোপবীতিনীম্

শঙ্খশার্ঙ্গসমাযুক্তবামপাণিদ্বয়ান্বিতাম্

চক্রঞ্চ পঞ্চবাণাংশ্চ দধতীং দক্ষিণে করে

রক্তবস্ত্রাপরিধানাং বালার্কসদৃশীতনুম্

নারদাদ্যৈর্মুনিগণৈঃ সেবিতাং ভবসুন্দরীম্।”

জগদ্ধাত্রী পূজার নিয়মটি একটু স্বতন্ত্র। দেবী জগদ্ধাত্রীর পূজা অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপূজার ঠিক একমাস পর কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে। কাত্যায়নীতন্ত্র–এ কার্তিকী শুক্লা নবমীতে দেবী জগদ্ধাত্রীর আবির্ভূত হওয়ার কথা আছে।

জগদ্ধাত্রী পূজা তান্ত্রিক পূজা। দুটি প্রথায় এই পূজা হয়ে থাকে। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী – এই তিন দিন জগদ্ধাত্রীর পূজা হয়ে থাকে।। কোথাও কোথাও প্রথম বা দ্বিতীয় পূজার পর কুমারী পূজারও আয়োজন করা হয়।

দুর্গাপূজার ন্যায় জগদ্ধাত্রী পূজাতেও বিসর্জনকৃত্য বিজয়াকৃত্য নামে পরিচিত। এমনকি পুষ্পাঞ্জলি ও প্রণাম মন্ত্রসহ পূজার অনেক মন্ত্রও দুর্গাপূজার অনুরূপ।

সোর্সঃ উইকিপিডিয়া ও ওয়ান ইন্ডিয়া

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.