আমরা যে কারণে জগদ্ধাত্রী পূজা করি! পর্ব -১

জগদ্ধাত্রী দুর্গা- ‘জয় সর্বগত দুর্গে জগদ্ধাত্রি নমোহস্তুতে’! জগদ্ধাত্রী শব্দের আভিধানিক অর্থ “জগৎ+ধাত্রী। জগতের (ত্রিভুবনের) ধাত্রী (ধারণকর্ত্রী, পালিকা)।” ব্যাপ্ত অর্থে দুর্গা, কালী সহ অন্যান্য শক্তিদেবীগণও জগদ্ধাত্রী। জগদ্ধাত্রীপূজা হিন্দুদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান।

তিনিই জগৎ সভ্যতার পালিকা শক্তি। তিনি দেবী দুর্গারই আর এক রূপ। তাই জগদ্ধাত্রীর প্রণামমন্ত্রে তাঁকে ‘দুর্গা’ বলে স্তুতি করা হয়েছে। তবে শাস্ত্রনির্দিষ্ট জগদ্ধাত্রী রূপের নামকরণের পশ্চাতে রয়েছে সূক্ষ্মতর ধর্মীয় দর্শন। জগদ্ধাত্রী বা জগদ্ধাত্রী দুর্গা হচ্ছেন দেবী দুর্গার রূপভেদ।

একই দেবীর দুই রূপ। এক জন দুর্গা, অন্য জন জগদ্ধাত্রী। উপনিষদে এঁর নাম উমা হৈমবতী । বিভিন্ন তন্ত্র ও পুরাণ গ্রন্থেও এঁর উল্লেখ পাওয়া যায়। জগদ্ধাত্রী আরাধনা বিশেষত বঙ্গদেশে প্রচলিত।

আবার পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চন্দননগর,গুপ্তিপাড়া ও নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী উৎসব জগদ্বিখ্যাত। কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু বাঙালির ধর্মীয় মানসে রাজসিক দেবী দুর্গা ও তামসিক কালীর পরেই স্থান সত্ত্বগুণের দেবী জগদ্ধাত্রীর।

স্বামী প্রমেয়ানন্দের মতে, “ধৃতিরূপিণী মহাশক্তি জগদ্ধাত্রী। সগুণ ব্রহ্মের সৃষ্টি, স্থিতি ও বিনাশরূপ তিনগুণের যুগপৎ প্রকাশ যেমন কালীরূপের বৈশিষ্ট্য, তাঁর ধারণী ও পোষণী গুণের যুগপৎ প্রকাশও জগদ্ধাত্রীরূপের বৈশিষ্ট্য।… ধা ধাতুর অর্থ ধারণ বা পোষণ।

ভগবতী নিখিল বিশ্বকে বক্ষে ধারণ করে পরিপালন করেন বলে মুনিগণ কর্তৃক তিনি ত্রৈলোক্যজননী নামে অভিহিত।… নিয়ত-পরিবর্তনশীল এই জগতের পেছনে রয়েছে তার রক্ষণ ও পোষণের জন্য অচিন্তনীয়া মহাশক্তির এক অদ্ভুত খেলা।

সতত পরিবর্তনশীল জগৎ সেই মহাশক্তির দ্বারা বিধৃত – যিনি নিত্যা, শাশ্বতী ও অপরিবর্তনীয়া। দেবী জগদ্ধাত্রীই সেই ধৃতিরূপিণী মহাশক্তি।”

সোর্সঃ উইকিপিডিয়া ও ওয়ান ইন্ডিয়া

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.