বাংলাদেশে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পর্যটকদের জন্য অনেক দর্শনীয় স্থান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ছোটবড় বেশকিছু ঝরনা, পাহাড়, চারদিকে সবুজ গাছ-গাছালি এক অনন্য সুন্দর মনোরম দৃশ্যের যুগ্ম সম্মিলনের এক অপার সৌন্দর্য এখানে উপস্থিত। সীতাকুণ্ডের কাছে বাড়বকুণ্ড ঝরনায় গিয়েছিলাম। বাড়বকুণ্ড ঝরনায় যাওয়ার পথে একটা প্রাচীন মন্দির পড়বে।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসে। চট্টগ্রাম থেকে বাস ধরে কুমিরায় নামলে ঠিক রাস্তার বিপরীতে বাড়বকুণ্ড বাজার। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে যাত্রা শুরু করলে ঠিক ঝরনার পথে আসবেন। ইটের তৈরি পাকা রাস্তা। আশেপাশে সবুজের সমারোহ।
মিনিট দশেক পর রিকশা থেকে নেমে হাঁটা শুরু করবেন। গন্তব্য পৌঁছাতে প্রথমেই সেই প্রাচীন মন্দির, এরপর ঝরনা। পাহাড়ি রাস্তা, ঝিরিপথ ও কাঁদা পেরিয়ে যেতে হবে। দু’পাশে সবুজঘেরা বনে পাখির কিচিরমিচির শব্দ মন জুড়িয়ে যায়। সবুজের মধ্যে দিয়ে ছোট আকারের টিলা ও পাহাড়ি ঝিরিপথ দেখতে পাবেন। সোজা রাস্তা, সুতরাং পথ হারানোর কোন সম্ভাবনা নেই। তারপরও চিনতে সমস্যা হলে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে পথ দেখিয়ে দেবে।
প্রায় ৩০ মিনিট হাঁটার পর একটু দূর থেকেই দৃষ্টিগোচর হলো প্রাচীন স্থাপত্য বাড়বকুণ্ড তীর্থধাম। সবুজ বৃক্ষমালার বুকে মহাকালের সাক্ষী হয়ে সটানে দাঁড়িয়ে আছে বাড়বকুণ্ড। লম্বা সিঁড়ি আরোহন করে মন্দিরে উঠতে হয়। দেখেই বোঝা গেলো, সিঁড়িটি নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছে। সিঁড়ি ধরে ওপরে উঠতেই দেখলাম বহু বছরের পুরোনো ইতিহাসে রচিত অতি প্রাচীন মন্দির। দেয়াল, ইট-খোয়া দেখে ধারণা করা যায় মোটামুটি ৩০০-৪০০ বছর আগের স্থাপনা এটি। এর নির্মাণের ধরন কিছুটা মোগলদের মতো।
মন্দিরের পাদদেশের অংশে জলের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে আগুন জ্বলে। হয়তো কোনও মিথেন বা অন্য কোনও প্রাকৃতিক গ্যাস এখানে স্ফুরণ হয়। এটাকে বলা হয় অগ্নিকুণ্ড। এখানে পূজা-অর্চনা চলে। মাসে একবার পুন্যার্থীরা আসেন সাথে পর্যটকরাও সব সময় এসে থাকেন। তীর্থ ভ্রমণে যখন পূন্যার্থীরা আসেন তখন মন্দিরে কিছুটা লোক জমায়েত হয়। এছাড়া বাকি সময়গুলোতে কোলাহল মুক্তই থাকে।
প্রাচীনকালের স্থাপত্য দেখলে অনুসন্ধানিক হয়ে যায় মন। এগুলো মন্ত্রমুগ্ধ করে অনায়াসে। গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। কোনও প্রাচীন স্থাপত্য সামনে এলে ইতিহাস খুঁজতে চেষ্টা করি। তখনকার সময় কেমন ছিল, তখন কী হতো, এসব চোখ বন্ধ করে কল্পনা করতে থাকি।
প্রায় ধ্বংস হতে যাওয়া মন্দিরের ইতিহাস জানার জন্য বিভিন্ন দেয়ালে নামফলক খোঁজার চেষ্টা করলাম। তবে কোথাও এমন কিছু বা লিখিত ইতিহাস খুঁজে পেলাম না। সরকারিভাবে এই তীর্থধাম ও অগ্নিকুণ্ডকে সংরক্ষণ করা উচিত। সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে দেশের সম্পদকে রক্ষা করা আমাদের একান্ত কর্তব্য। এতে সরকারের পর্যটন খাতের আয় বাড়বে। দেশের বাহির থেকে পর্যটক ভ্রমণ করতে আসলে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রাজস্ব খাতে অবদান রাখবে।
আরো আপডেট পেতে
Bangla Panjika 2023 Paji 1430 Download করুন
For Bangla Calendar, Bangla Panjika, Bengali Calendar, Horoscope download Bangla Panjika 2023 Paji 1430