গীতা-মাহাত্ম্য

শ্রীবৈষ্ণবীয়-তন্ত্রসারে গীতা-মাহাত্ম্য

ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়

শৌনক উবাচ
গীতায়াশ্চৈব মাহাত্মং য্থাবৎ সূত মে বদ৷
পুরা নারায়্ণ ক্ষেত্রে ব্যাসেন মুনিনোদিতম্ ॥১॥
অর্থ: শৌনক ঋষি বললেন, হে সূত, পুরাকালে নারায়্ণ ক্ষেত্রে মহামুনি ব্যাস-কথিত গীতামাহাত্ম্য আমাকে বলুন৷

সূত উবাচ
ভদ্রং ভগবতা পৃষ্টং যদ্ধি গুপ্ত তমং পরম্৷
শক্যতে কেন তদ্বক্তুং গীতামাহাত্ম্যমুত্তমম্ ॥২॥
অর্থ: সূত গোস্বামী বললেন, হে ভগবন্, আপনি উত্তম জিজ্ঞাসা করেছেন৷ যা পরম গোপনীয়্তম সেই উত্তম গীতামাহাত্ম্য কে বলতে সমর্থ ?

কৃষ্ণো জানাতি বৈ সম্যক্ কিঞ্চিৎ কুন্তীসুতঃ ফলম্ ৷
ব্যাসো বা ব্যাসপুত্রো যা যাজ্ঞবল্ক্যোহ্থমৈথিলঃ ॥৩॥
অর্থ: শ্রীকৃষ্ণই তা সম্যকভাবে জানেন৷ কুন্তীপুত্র অর্জুন তার কিঞ্চিৎ ফল জানেন৷ আর ব্যাসদেব, শুকদেব, যাজ্ঞবল্ক্য ও রাজর্ষি জনক তাঁরাও কিছু কিছু জ্ঞাত আছেন৷

অন্যে শ্রবণতঃ শ্রুত্বা লেশং সংকীর্তয়ন্তি চ৷
তস্মাৎ কিঞ্চিদ্ বদাম্যত্র ব্যাসস্যাস্যান্ময়া শ্রুতম্ ॥৪॥
অর্থ: এছাড়া অন্যেরা পরম্পরা ধারায় শ্রবণ করে তার লেশ মাত্র কীর্তন করে থাকেন৷ আমি ব্যাসদেবের কাছে যেভাবে শ্রবণ করেছি তারই কিঞ্চিৎ এখানে বলছি ৷

সর্বোপনিষদো গাবো দোগ্ধা গোপালনন্দনঃ৷
পার্থো বৎসঃ সুধীর্ভোক্তা দুগ্ধং গীতামৃতং মহৎ॥৫॥
অর্থ: এই গীতোপনিষদ্ ভগবদ্ গীতা সমস্ত উপনিষদের সারাতিসার এবং তা ঠিক একটি গাভীর মতো এবং রাখাল বালকরূপে প্রসিদ্ধ ভগবান শ্রীকৃষ্ণই এই গাভীকে দোহন করেছেন৷ অর্জুন যেন গোবৎসের মতো এবং জ্ঞানীগুণী ও শুদ্ধ ভক্তেরাই ভগবদ্ গীতার সেই অমৃতময় দুগ্ধ পান করে থাকেন৷

সারথ্যমর্জুনস্যাদৌ কুর্বন্ গীতামৃতং দদৌ৷
লোকত্রয়োপকারায় তস্মৈ কৃষ্ণাত্মনে নমঃ ॥৬॥
অর্থ: যে কৃষ্ণ অর্জুনের সারথ্য স্বীকার করে ত্রিলোকের উপকারের জন্যে এই গীতামৃত প্রদান করেছেন, আমি প্রথমেই সেই শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম জানাই৷

সংসার সাগরং ঘোরং ত্যক্তুমিচ্ছতি যো নরঃ৷
গীতানাবং সমাসাদ্য পারং যাতি সুখেন সঃ ॥৭॥
অর্থ: যে ব্যক্তি ঘোর সংসার-সাগর উত্তীর্ণ হতে চান, তিনি গীতারূপ নৌকার আশ্রয়ে সুখেই পার হতে পারেন৷

গীতাজ্ঞানং শ্রুতং নৈব সদৈবাভ্যাস্যযোগতঃ৷
মোক্ষমিচ্ছতি মূঢ়াত্মা যাতি বালকহাস্যতাম্ ॥৮॥
অর্থ: গীতাজ্ঞান শ্রবণ না করেই যে মূঢ়াত্মা সর্বদা অভ্যাস যোগে মোক্ষলাভ করতে চায়, তাকে বালকেরাও উপহাস করে৷

যে শৃন্বন্তি পঠন্ত্যেব গীতাশাস্ত্রমহর্নিশম্৷
ন তে বৈ মানুষা জ্ঞেয়া দেবরূপা ন সংশয়ঃ ॥৯॥
অর্থ: যাঁরা অহর্নিশ গীতাশাস্ত্র শ্রবণ বা পাঠ করেন, তাঁরা কথনই সাধারণ মানুষ নন, তাঁরা নিশ্চিত দেবতুল্য, এতে সংশয় নেই৷

গীতাজ্ঞানেন সম্বোধং কৃষ্ণঃ প্রাহার্জুনায় বৈ৷
ভক্তিতত্ত্বং পরং তত্র সগুণং বাথ নির্গুণম্ ॥১০॥
অর্থ: ভগবান কৃষ্ণচন্দ্র গীতাজ্ঞান দ্বারা অর্জুনের সম্বোধনার্থ সগুণ ও নির্গুণ পরম ভক্তিতত্ত্ব কীর্তন করেছিলেন৷

সোপানাষ্টাদশৈরেবং ভুক্তিমুক্তিসমুচ্ছ্রিতৈঃ৷
ক্রমশো চিত্তশুদ্ধিঃ স্যাৎ প্রেমভক্ত্যাদি কর্মসু ॥১১॥
অর্থ: এভাবে ভোগ ও মোক্ষ নিরাকৃত অষ্টাদশ অধ্যায় সোপান বিশিষ্ট গীতাজ্ঞান দ্বারা চিত্ত শুদ্ধ হয় এবং ক্রমশ প্রেমভক্তিতে অধিকার জন্মে৷

সাধোর্গীতাম্ভসি স্নানং সংসারমলনাশনম্৷
শ্রদ্ধাহীনস্য তৎকার্যং হস্তিস্নানং বৃথৈব তৎ॥১২॥
অর্থ: এই গীতারূপ সলিলে স্নান করে সাধুব্যক্তিরা সংসার মল মুক্ত হন৷ কিন্তু শ্রদ্ধাহীন জনের সেই স্নান হস্তিস্নানের মতো বৃথা হয়ে থাকে৷

গীতায়াশ্চ ন জানাতি পঠনং নৈব পাঠনম্৷
স এব মানুষে লোকে মোঘকর্মকরো ভবেৎ ॥১৩॥
অর্থ: যে ব্যক্তি গীতার পঠন পাঠন কিছু জানে না, সেই ব্যক্তি মানব সমাজে অনর্থ কর্মকারী৷

তস্মাদ্ গীতাং ন জানাতি নাধমস্তৎপরো জনঃ৷
ধিক্ তস্য মানুষং দেহং বিজ্ঞানং কুলশীলতাম্ ॥১৪॥
অর্থ: অতএব গীতাতত্ত্ব যে জানে না, তার থেকে অধম ব্যক্তি আর কেউ নেই৷ তার কুল, শীল, বিজ্ঞান ও মনুষ্যদেহে ধিক্ ৷

গীতার্থং ন বিজানাতি নাধমস্তৎপরো জনঃ৷
ধিক্ শরীরং শুভং শীলং বিভবন্তদ্ গৃহাশ্রমম্ ॥১৫॥
অর্থ: যে গীতার অর্থ জানে না, তার থেকে অধম আর নেই৷ তার সুন্দর দেহ, তার চরিত্র, তার বৈভব, তার গৃহ আশ্রম সবই ধিক্৷

গীতাশাস্ত্রং ন জানাতি নাধমস্তৎপরো জনঃ৷
ধিক্ প্রারব্ধং প্রতিষ্ঠাঞ্চ পূজাং দানং মহত্তমম্ ॥১৬॥
অর্থ:যে ব্যক্তি গীতাশাস্ত্র জানে না, তার অপেক্ষা অধম জন আর নেই, তার প্রারব্ধ কর্মে ধিক্, তার প্রতিষ্ঠায় ধিক্, তার পূজা, দান, মহত্ত্ব সমস্তই ধিক্৷

গীতাশাস্ত্রে মতির্নাস্তি সর্বং তন্নিষ্ফলং জগুঃ৷
ধিক্ তস্য জ্ঞানদাতারং ব্রতং নিষ্ঠাং তপো য্শঃ ॥১৭॥
অর্থ: গীতাশাস্ত্রে মতিহীন ব্যক্তির সমস্তই নিষ্ফল বলে কথিত হয়৷ তার জ্ঞানদাতাকে ধিক্, তার ব্রতে ধিক্, তার নিষ্ঠায় ও তপস্যায় ধিক্, তার যশেও ধিক্৷

গীতার্থ-পঠনং নাস্তি নাধমস্তৎপরো জনঃ৷
গীতাগীতং ন য্জ্ জ্ঞানং তদ্বিদ্ধ্যাসুরসম্মতম্ ৷
তন্মোঘং ধর্মরহিতং বেদবেদান্তগর্হিতম্ ॥১৮॥
অর্থ: যে ব্যক্তি গীতার্থ আলোচনা করে না, তার চেয়ে অধম আর নেই৷ যে জ্ঞান গীতায় গীত হয় নি, সেই জ্ঞান নিষ্ফল, সেই জ্ঞান ধর্মরহিত, সেই জ্ঞান বেদ-বেদান্ত গর্হিত এবং অসুর সম্মত জ্ঞান বলে জানবে৷

তস্মাদ্ধর্মময়ী গীতা সর্বজ্ঞানপ্রযোজিকা৷
সর্বশাস্ত্রসারভূতা বিশুদ্ধা সা বিশিষ্যতে ॥১৯॥
অর্থ: অতএব গীতাই ধর্মময়ী সর্বজ্ঞান-প্রযোজিকা এবং সর্বশাস্ত্রসার-ভূতা বিশুদ্ধা বলে সর্বত্র সর্বকালে সমাদৃতা৷

যোহ্ধীতে বিষ্ণুপর্বাহে গীতাং শ্রীহরিবাসরে৷
স্বপন্ জাগ্রৎ চলনতিষ্ঠন্ শত্রভির্ন স হীয়তে ॥২০॥
অর্থ: যে ব্যক্তি বিষ্ণুপর্বদিনে বিশেষত শ্রীহরিবাসর তিথি একাদশীতে গীতা অধ্যয়্ন করেন, তিনি নিদ্রিত বা জাগ্রত অবস্থায় গমন বা অবস্থান কালে কখনই শত্রু দ্বারা পরাভূত হন না ৷

শাল গ্রাম শিলায়াং বা দেবাগারে শিবালয়ে ৷
তীর্থে নদ্যাং পঠেদ্ গীতাং সৌভাগং লভতে ধ্রুবম্ ॥২১॥
অর্থ: যিনি শালগ্রামশিলার সাম নে, দেবাগারে বা শিবালয়ে, তীর্থে ও নদীতটে গীতা পাঠ করেন, তিনি নিশ্চিত সৌভাগ্য লাভের অধিকারী হন৷

দেবকীনন্দনঃ কৃষ্ণো গীতাপাঠেন তুষ্যতি৷
য্থা ন বেদৈর্দানেন যজ্ঞতীর্থব্রতাদিভিঃ ॥২২॥
অর্থ: দেবকীনন্দন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতাপাঠে যে প্রকার তুষ্ট হন, বেদ অধ্যায়্ন, দান, যজ্ঞ, তীর্থভ্রমণ বা ব্রত ইত্যাদি দ্বারাও সে প্রকার সন্তুষ্ট হন না৷

গীতাধীতা চ যেনাপি ভক্তিভাবেন চিতসা৷
বেদশাস্ত্রপুরাণানি তেনাধীতানি সর্বশঃ ॥২৩॥
অর্থ: যিনি ভক্তিভাবিত চিত্তে গীতা অধ্যয়্ন করেন, বেদ পুরাণাদি সমস্ত শাস্ত্রই সর্বতোভাবে তাঁর অধ্যয়্ন করা হয়ে যায়৷

যোগস্থানে সিদ্ধপীঠে শিলাগ্রে সৎসভাসু চ৷
যজ্ঞে চ বিষ্ণুভক্তাগ্রে পঠন্ সিদ্ধিং পরাং লভেৎ॥২৪॥
অর্থ: যোগস্থানে, সিদ্ধপীঠে, শালগ্রাম সম্মুখে, সজ্জন সভায়, যজ্ঞে বিশেষত বৈষ্ণবের কাছে গীতাপাঠ করলে পরমা সিদ্ধি লাভ হয়৷

গীতাপাঠঞ্চ শ্রবণং যং করোতি দিনে দিনে৷
ক্রতবো বাজিমেধাদ্যাঃ কৃতাস্তেন সদক্ষিণাঃ॥২৫॥
অর্থ: যিনি প্রত্যহ গীতা পাঠ ও শ্রবণ করেন তাঁর সদক্ষিণা অশ্বমেধাদি যজ্ঞ ফল স্বাভাবিকভাবেই লাভ হয়৷

যঃ শৃণোতি চ গীতার্থং কীর্তয়ত্যেব যঃ পরম্৷
শ্রাবয়েচ্চ পরার্থং বৈ স প্রযাতি পরং পদম্ ॥২৬॥
অর্থ: যিনি যত্ন সহকারে গীতার্থ শ্রবণ-কীর্তন বা অন্যকে শ্রবণ করান, তিনি পরমপদ বৈকুণ্ঠ লাভ করেন৷

গীতায়াং পুস্তকং শুদ্ধং যোহর্পয়ত্যেব সাদরাৎ৷
বিধিনা ভক্তিভাবেন তস্য ভার্যা প্রিয়া ভবেৎ॥২৭॥

য্শঃ সৌভাগ্যমারোগ্যং লভতে নাত্র সংশয়ঃ৷
দয়িতানাযং প্রিয়ো ভূত্বা পরমং সুখমশ্নুতে ॥২৮॥
অর্থ (২৭-২৮): যে ব্যক্তি সাদরে ভক্তিভাবে বিধিপূর্বক বিশুদ্ধ গীতা পুস্তক কাউকে অর্পণ করে, তাঁর ভার্যা প্রিয়া হয়৷ এবং তিনি য্শ, সৌভাগ্য, আরোগ্য লাভ করেন৷ এতে সন্দেহ নেই৷ অধিকন্তু প্রিয়্জনের অতি প্রিয় হয়ে তিনি পরম সুখ ভোগ করেন৷

অভিচারোদ্ভবং দুঃখং বরশাপাগতঞ্চ যৎ৷
নোপসর্পতি তত্রৈব যত্র গীতার্চানং গৃহে ॥২৯॥

তাপত্রয়োদ্ভবা পীড়া নৈব ব্যাধির্ভবেৎ ক্বচিৎ৷
ন শাপো নৈব পাপঞ্চ দুর্গতির্নরকং ন চ ॥৩০॥

বিস্ফোটকাদয়ো দেহে ন বাধন্তে কদাচনঃ৷
লভেৎ কৃষ্ণপদে দাস্যং ভক্তিঞ্চাব্যভিচারিণীম্ ॥৩১॥
অর্থ (২৯-৩১): যে গৃহে গীতা অর্চিত হয়ে থাকে সেখানে কখনও অভিশাপ বা অভিচার উদ্ভূত দুঃখ প্রবেশ করতে পারে না ৷ কখনও সেখানে ত্রিতাপ ক্লেশ, শাপ, পাপ, দুর্গতি বা নরকভয় থাকে না ৷ কখনও বিস্ফোটকাদি পীড়া দেহে জন্মে না ৷ সেখানকার জনগণ শ্রীকৃষ্ণপাদপদ্মে অব্যভিচারিণী দাস্য-ভক্তি লাভ করেন ৷

জায়তে সততং সখ্যং সর্বজীবগণৈঃ সহ ৷
প্রারব্ধং ভুঞ্জতো বাপি গীতাভ্যাসরতস্য চ ৷
স মুক্তঃ স সুখী লোকে কর্মণা নোপলিপ্যতে ॥৩২॥
অর্থ: গীতা অনুশীলনরত ব্যক্তি প্রারব্ধ ফল ভোগ করলেও সমস্ত জীবের সংগে তাঁর সখ্যভাব উৎপন্ন হয় ৷ সে ব্যক্তি মুক্ত ও সুখী ৷ এ জগতে কর্ম করেও তিনি কর্মে লিপ্ত হন না ৷

মহাপাপাতিপাপানি গীতাধ্যায়ী করোতি চেৎ ৷
ন কিঞ্চিৎ স্পৃশ্যতে তস্য নলিনীদলমম্ভসা ॥৩৩॥
অর্থ:গীতা অধ্যয়নকারী ব্যক্তি হঠাৎ মহাপাপ, অতিপাপ করে ফেললেও সেই সব পাপ তাঁকে পদ্মপত্রজলের মতো বিন্দুমাত্র স্পর্শ করতে পারে না ৷

অনাচারোদ্ভবং পাপমবাচ্যাদি কৃতঞ্চ যৎ ৷
অভক্ষ্যভক্ষজং দোষমস্পৃশ্যস্পর্শজং তথা ॥৩৪॥

জ্ঞানাজ্ঞানকৃতং নিত্যমিন্দ্রিয়ৈর্জনিতঞ্চ যৎ ৷
তৎ সর্বং নাশমায়াতি গীতাপাঠেন তৎক্ষণাৎ ॥৩৫॥
অর্থ (৩৪-৩৫): অনাচার-উদ্ভূত পাপ বা অবাচ্য-কথন পাপ, অভক্ষ্য-ভক্ষণ দোষ এবং জ্ঞান-অজ্ঞানকৃত দৈনন্দিন ইন্দ্রিয়জ সমস্ত প্রকার পাপই গীতাপাঠে সদ্য বিনষ্ট হয় ৷

সর্বত্র প্রতিভোক্তা চ প্রতিগৃহ্য চ সর্বশঃ ৷
গীতাপাঠং প্রকুর্বাণো ন লিপ্যতে কদাচন ॥৩৬॥
অর্থ:সর্বত্র ভোজন বা সর্বতোভাবে প্রতিগ্রহণ করলেও প্রকৃষ্টরূপে গীতাপাঠকারী সর্বদা তাতে নির্লিপ্ত থাকেন ৷

রত্নপূর্ণা মহীং সর্বাং প্রতিগৃহ্যাবিধানতঃ৷
গীতাপাঠেন চৈকেন শুদ্ধস্ফটিকবৎ সদা ॥৩৭॥
অর্থ: এমন কি অবিধিপূর্বক রত্নপূর্ণা সসাগরা ধরিত্রী প্রতিগ্রহকারীও একবার গীতাপাঠেই শুদ্ধ স্ফটিকের মতো নির্মল হয়৷

য্স্যান্তঃকরণং নিত্যং গীতায়াং রমতে সদা৷
স সাগ্নিকঃ সদা জাপী ক্রিয়াবান্ স চ পণ্ডিতঃ ॥৩৮॥

দর্শণীয়ঃ স ধনবান্ স যোগী জ্ঞানবান অপি৷
স এব যাজ্ঞিকো যাজী সর্ববেদার্থদর্শকঃ ॥৩৯॥
অর্থ (৩৮-৩৯): যাঁর অন্তঃকরণ সদা সর্বদা গীতাতেই নিবিষ্ট, তিনিই প্রকৃষ্ট সাগ্নিক, সর্বদা জপী, ক্রিয়াবান, এবং তিনিই প্রকৃত পণ্ডিত৷ তিনিই দর্শণীয়, তিনিই ধনবান, তিনিই যোগী বা প্রকৃত জ্ঞানবান এবং তিনিই যাজ্ঞিক, যাজনকারী এবং তিনিই সর্ব বেদার্থ দর্শক৷

গীতায়াঃ পুস্তকং যত্র নিত্যপাঠশ্চ বর্ততে৷
তত্র সর্বাণি তীর্থানি প্রয়াগাদীনি ভূতলে ॥৪০॥
অর্থ:যেখানে নিত্য গীতা পুস্তক অবস্থান করে, এ জগতে সেখানে প্রয়াগাদি সর্ব তীর্থ সর্বদা অবস্থান করেন৷

নিবসন্তি সদা দেহে দেহশেষেহপি সর্বদা৷
সর্বে দেবাশ্চ ঋষয়ো যোগিনো দেহরক্ষকাঃ ॥৪১॥
অর্থ: সর্বদা গীতা অধ্যায়্নকারীর দেহে, বা দেহত্যাগের পরও দেহরক্ষক রূপে দেবতা, ঋষি বা যোগীরা অবস্থান করেন৷

গোপালো বালকৃষ্ণোহপি নারদধ্রুবপার্ষদৈঃ৷
সহায়ো জায়তে শীঘ্রং য্ত্র গীতা প্রবর্ততে ॥৪২॥
অর্থ:যেখানে গীতা বর্তমান থাকেন, সেখানে নারদ, ধ্রুব আদি পার্ষদবৃন্দসহ স্বয়ং বালগোপাল শ্রীকৃষ্ণ সহায়-রূপে আবির্ভূত হন৷

য্ত্র গীতা বিচারশ্চ পঠনং পাঠনং তথা৷
মোদতে তত্র শ্রীকৃষ্ণো ভগবান্ রাধয়া সহ ॥৪৩॥
অর্থ: যে স্থানে গীতা শাস্ত্রের বিচার এবং পঠন পাঠন হয়, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সে স্থানে শ্রীরাধিকার সঙ্গে পরমানন্দে বিরাজ করেন৷

ভগবান উবাচ
গীতা মে হৃদয়ং পার্থ গীতা মে সারমুত্তমম্৷
গীতা মে জ্ঞানমত্যুগ্রং গীতা মে জ্ঞানমব্যয়্ম্ ॥৪৪॥
অর্থ:শ্রীভগবান বললেন,- হে পার্থ ! গীতা আমার হৃদয়, গীতা আমার উত্তম সার-স্বরূপ, গীতা আমার অত্যুগ্র জ্ঞান এবং গীতাই আমার অব্যয়-জ্ঞান ৷

গীতা মে চোত্তমং স্থানং গীতা মে পরমং পদম্৷
গীতা মে পরমং গুহ্যং গীতা মে পরমো গুরু ॥৪৫॥
অর্থ:গীতা আমার উত্তম স্থান, গীতা আমার পরম পদ, গীতা আমার পরম গোপনীয় বস্তু, বিশেষ কি গীতাই আমার পরম গুরু৷

গীতাশ্রয়েহ্হং তিষ্ঠামি গীতা মে পরমং গৃহং৷
গীতাজ্ঞানং সমাশ্রিত্য ত্রিলোকীং পালয়াম্যহম্ ॥৪৬॥
অর্থ:গীতার আশ্রয়েই আমি বর্তমান আছি, গীতাই আমার পরম গৃহ৷ এই গীতাজ্ঞানকে সম্যকভাবে আশ্রয় করেই আমি ত্রিলোক পালন করে থাকি৷

গীতা মে পরমা বিদ্যা ব্রহ্মরূপা ন সংশয়ঃ৷
অর্ধমাত্রাহরা নিত্যমনির্বাচ্যপদাত্মিকা ॥৪৭॥
অর্থ: অর্ধমাত্রা-স্বরূপা নিত্য অনির্বাচ্যপদাত্মিকা গীতাই আমার ব্রহ্মরূপা পরাবিদ্যা- তা নিঃসংশয়ে জানবে৷

গীতা নামানি বক্ষামি গুহ্যানি শৃণু পাণ্ডব৷
কীর্তনাৎ সর্বপাপানি বিলয়ং যান্তি তৎক্ষণাৎ ॥৪৮॥
অর্থ:হে পাণ্ডব ! গীতার যে নামসমূহ কীর্তনের দ্বারা তৎক্ষণাৎ সমস্ত পাপ ধ্বংস হয়, সেই গোপনীয় নাম সকল বলছি, শ্রবণ কর৷

গঙ্গা গীতা চ সাবিত্রী সীতা সত্যা পতিব্রতা৷
ব্রহ্মাবলির্ব্রহ্মবিদ্যা ত্রিসন্ধ্যা মুক্তিগেহিনী ॥৪ঌ॥

অর্ধ মাত্রা চিদা নন্দা ভবঘ্নী ভ্রান্তিনাশিনী৷
বেদত্রয়ী পরানন্দা তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জরী ॥৫০॥

ইত্যেতানি জপেন্নিত্যং নরো নিশ্চলমানসঃ৷
জ্ঞান সিদ্ধিং লভেন্নিত্যং তথান্তে পরমং পদম্ ॥৫১॥
অর্থ (৪৯-৫১): গঙ্গা, গীতা, সাবিত্রী, সীতা, সত্যা, পতিব্রতা, ব্রহ্মাবলী, র্ব্রহ্মবিদ্যা, ত্রিসন্ধ্যা, মুক্তিগেহিনী, অর্ধমাত্রা, চিদানন্দা, ভবঘ্নী, ভ্রান্তি-নাশিনী, বেদত্রয়ী, পরানন্দা, তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জরী- যে মানুষ অচঞ্চলচিত্তে এই গুপ্ত নাম সমূহ নিত্য জপ করেন, তিনি দিব্যজ্ঞান-সিদ্ধি লাভ করেন এবং অন্তে পরমপদ প্রাপ্ত হন৷

পাঠেহসমর্থঃ সম্পূর্ণে তদর্ধংপাঠমাচরেৎ৷
তদা গোদানজং পুণ্যং লভতে নাত্র সংশয়ঃ ॥৫২॥
অর্থ:সম্পূর্ণ গীতাপাঠে অসমর্থ হলে তার অর্ধাংশ পাঠ করবে৷ তাতে নিঃসন্দেহে গো-দান জনিত পুণ্য লাভ হবে৷

ত্রিভাগং পঠমানস্তু সোমযাগফলং লভেৎ৷
ষড়ংশং জপমানস্ত্ত গঙ্গাস্নানফলং লভেৎ ॥৫৩॥
অর্থ:এক-তৃতীয়াংশ গীতা পাঠে সোম-যজ্ঞের ফল এবং এক-ষষ্ঠাংশ জপে গঙ্গাস্নান ফল লাভ করবে৷

তথাধ্যায়্দ্বয়ং নিত্যং পঠমানো নিরন্তরম্৷
ইন্দ্রলোকমবাপ্নোতি কল্পমেকং বসেদ্ ধ্রুবম্ ॥৫৪॥
অর্থ: যিনি নিষ্ঠাসহকারে নিত্য গীতার দুটি অধ্যায় পাঠ করেন, তিনি নিঃসন্দেহে ইন্দ্রলোক লাভ করে সেখানে কল্পকাল বাস করেন৷

একমধ্যায়্কং নিত্যং পঠতে ভক্তি সংযুতঃ৷
রুদ্রলোকমবাপ্নোতি গণো ভূত্বা বসেচ্চিরম্ ॥৫৫॥
অর্থ: যিনি ভক্তি সহ্কারে দৈনিক একটি অধ্যায় পাঠ করেন, তিনি চির কালের জন্য রুদ্রগণে পরিগণিত হয়ে রুদ্রলোক লাভ করেন৷

অধ্যায়ার্ধঞ্চ পাদং বা নিত্যং যঃ পঠতে জনঃ৷
প্রাপ্নোতি রবিলোকং স মন্বন্তরসমাঃ শতম্ ॥৫৬॥
অর্থ:যে ব্যক্তি অর্ধ-অধ্যায় বা এক-চতুর্থাংশ নিত্য পাঠ করেন, তিনি শতমন্বন্তর সমকাল রবিলোক প্রাপ্ত হন৷

গীতায়াঃ শ্লোকদশকং সপ্তপঞ্চচতুষ্টয়্ম্ ৷
ত্রিদ্ব্যেকমর্ধমথ বা শ্লোকানাং যঃ পঠেন্নরঃ ৷
চন্দ্রলোকমবাপ্নোতি বর্ষাণামযুতং তথা ॥৫৭॥
অর্থ: যে ব্যক্তি এই গীতার দশটি বা সাতটি বা পাঁচটি বা তিনটি বা দুটি বা একটি বা অর্ধশ্লোকও শ্রদ্ধাসহকারে পাঠ করেন, তিনি চন্দ্রলোক প্রাপ্ত হয়ে সেখানে অযুতবর্ষকাল বাস করেন৷

গীতার্ধমেকপাদঞ্চ শ্লোকমধ্যায়মেব চ৷
স্মরংস্ত্যক্ত্বা জন্মো দেহং প্রয়াতি পরমং পদম্ ॥৫৮॥
অর্থ: যিনি গীতার অর্ধভাগ, একপাদ, বা একটি অধ্যায় বা শ্লোকও স্মরণ করতে করতে দেহ ত্যাগ করেন, তিনি পরমপদ লাভ করেন৷

গীতার্থমপি পাঠং বা শৃণুয়াদন্তকালতঃ৷
মহাপাতকযুক্তোহপি মুক্তিভাগী ভবেজ্জনঃ ॥৫৯॥
অর্থ:মৃত্যুকালে গীতার্থ পাঠ বা শ্রবণ করে মহাপাতকযুক্ত ব্যক্তিও মুক্তিভাগী হয়৷

গীতাপুস্তক সংযুক্তঃ প্রাণংত্যক্ত্বা প্রয়াতি যঃ৷
স বৈকুণ্ঠমবাপ্নোতি বিষ্ণুনা সহ মোদতে ॥৬০॥
অর্থ:যিনি গীতাপুস্তক-সংযুক্ত হয়ে দেহ্ত্যাগ করেন, তিনি বৈকুণ্ঠ লাভ করে ভগবান বিষ্ণুর সঙ্গে আনন্দে বিরাজ করেন৷

গীতাধ্যায়স মাযুক্তো মৃতো মানুষ তাং ব্রজেৎ৷
গীতাভ্যাসং পুনঃ কৃত্বা লভতে মুক্তিমুত্তমাম্ ॥৬১॥
অর্থ: গীতার একটি অধ্যায় সমাযুক্ত হয়ে মৃত্যু হলে, পুনরায় সে মনুষ্যজন্ম লাভ করে গীতাভ্যাসের দ্বারা উত্তমা-মুক্তি লাভ করেন৷

গীতেত্যুচ্চারসংযুক্তো ম্রিয়োমাণো গতিং লভেৎ॥৬২॥
অর্থ: গীতা এই শব্দ উচ্চারণের সঙ্গে মৃত্যু হলেও সদ্ গতি লাভ হয়৷

য্দ্ যৎ কর্ম চ সর্বত্র গীতাপাঠ প্রকীর্তিমৎ৷
তত্তৎ কর্ম চ নির্দোষং ভূত্বা পূর্ণত্বমাপ্নুয়াৎ ॥৬৩॥
অর্থ:যে সমস্ত কর্ম গীতাপাঠ সহকারে অনুষ্ঠিত হয়, সে সমস্তই নির্দোষ হয়ে পূর্ণত্ব লাভ করে৷

পিতৃনুদ্দিশ্য যঃ শ্রাদ্ধে গীতাপাঠং করোতি হি৷
সন্ত্তষ্টাঃ পিতরস্তস্য নিরয়াদ্ যান্তি স্বর্গতিম্ ॥৬৪॥
অর্থ:পিতৃগণের উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি শ্রাদ্ধে গীতাপাঠ করেন, তাঁর পিতৃগণ সন্ত্তষ্ট হন ও নরক থেকে স্বর্গে গমন করেন৷

গীতাপাঠেন সন্ত্তষ্টাঃ পিতরঃ শ্রাদ্ধতর্পিতাঃ৷
পিতৃলোকং প্রয়ান্ত্যেব পুত্রাশীর্বাদতৎপরাঃ ॥৬৫॥
অর্থ: শ্রাদ্ধকালে গীতাপাঠ দ্বারা শ্রাদ্ধতর্পিত পিতৃগণ, সেই পুত্রকে আশীর্বাদ করতে করতে পিতৃলোক গমন করেন৷

গীতাপুস্তকদানঞ্চ ধেনুপুচ্ছ সমন্বিতম্ ৷
কৃত্বা চ তদ্দিনে সম্যক্ কৃতার্থো জায়তে জনঃ ॥৬৬॥
অর্থ:চামর সমন্বিত গীতাগ্রন্থ দান করলে সেই দিনেই মানুষ সম্যক্ ভাবে কৃতার্থতা লাভ করে৷

পুস্তকং হেমসংযুক্তং গীতায়াঃ প্রকরোতি যঃ ৷
দত্ত্বা বিপ্রায় বিদুষে জায়তে ন পুনর্ভবম্ ॥৬৭॥
অর্থ:পণ্ডিত ব্রাহ্মণকে যিনি সুবর্ণ সংযুক্ত গীতা দান করেন, তাঁর আর জন্ম হয় না৷

শতপুস্তকদানঞ্চ গীতায়াঃ প্রকরোতি যঃ
স যাতি ব্রহ্মসদনং পুনরাবৃত্তিদুর্লভম্ ॥৬৮॥
অর্থ:যিনি একশতখানি গীতা দান করেন, তিনি পুনরাবৃত্তিদুর্লভ ব্রহ্মধামে গমন করেন৷

গীতাদানপ্রভাবেন সপ্তকল্পমিতা সমাঃ৷
বিষ্ণুলোকমবাপ্যন্তে বিষ্ণুনা সহ মোদতে ॥৬৯॥
অর্থ:গীতাদান-প্রভাবে সপ্ত-কল্পকাল যাবৎ বিষ্ণুলোকে স্থান লাভ করে জীব পরমানন্দে বিষ্ণুর সঙ্গে বাস করেন৷

সম্যক্ শ্রুত্বা চ গীতার্থং পুস্তকং যঃ প্রদাপয়েৎ৷
তস্মৈ প্রীতং শ্রীভগবান্ দদাতি মানসেপ্সিতম্ ॥৭০॥
অর্থ:যিনি গীতার্থ সম্যকভাবে শ্রবণ করে সেই পুস্তক ব্রাহ্মণকে দান করেন, শ্রীভগবান প্রীত হয়ে তাঁর মনোঅভীষ্ট পূরণ করেন৷

ন শৃণোতি ন পঠতি গীতামমৃতরূপিণীম্ ৷
হ্স্তাত্ত্যক্ত্বামৃতং প্রাপ্তং স নরো বিষ মশ্নুতে ॥৭১॥
অর্থ:যে ব্যক্তি অমৃতরূপিণী গীতা পাঠ বা শ্রবণ না করে, সে হ্স্তস্থিত অমৃত পরিত্যাগ করে বিষ ভক্ষণ করে৷

জনঃ সংসারদুঃখার্তো গীতাজ্ঞানং সমালভেৎ৷
পীত্বা গীতামৃতং লোকে লব্ধা ভক্তিং সুখী ভবেৎ ॥৭২॥
অর্থ:মরজগতে সংসার-দুঃখার্তজন গীতাজ্ঞান লাভ করে ও গীতামৃত পান করে ভগবদ্-ভক্তির আশ্রয় লাভ করে ও সুখী হয়৷

গীতামাশ্রিত্য বহবো ভূভূজো জনকাদয়ঃ৷
নির্ধূতকল্মষা লোকে গতাস্তে পরমং পদম্ ॥৭৩॥
অর্থ: জনকাদি বহু রাজর্ষি গীতা-জ্ঞান আশ্রয়েই নিষ্পাপ থেকে পরমপদ লাভ করেছেন৷

গীতাসু ন বিশেষোহস্তি জনেষূচ্চাবচেষু চ৷
জ্ঞানেষ্বেব সমগ্রেষু সমা ব্রহ্মস্বরূপিণী ॥৭৪॥
অর্থ: গীতাপাঠে উচ্চ-নীচ কুলের বিচার নাই৷ শ্রদ্ধালু মাত্রেই গীতাপাঠের অধিকারী৷ যেহেতু সমগ্র জ্ঞানের মধ্যে গীতাই ব্রহ্মস্বরূপিণী৷

যোহভিমানেন গর্বেণ গীতানিন্দাং করোতি চ ৷
স যাতি নরকং ঘোরং যাবদাহূতসংপ্লবম্ ॥৭৫॥
অর্থ:যে ব্যক্তি অভিমান বা গর্বভরে গীতার নিন্দা করে, সে মহাপ্রলয় কাল পর্যন্ত ঘোর নরকে বাস করে৷

অহঙ্কারেণ মূঢ়াত্মা গীতার্থং নৈব মন্যতে ৷
কুম্ভীপাকেষু পচ্যেত যাবৎ কল্পক্ষয়ো ভবেৎ ॥৭৬॥
অর্থ:যে মূঢ়াত্মা অহঙ্কারে স্ফীত হয়ে গীতার্থ অবমাননা করে, সে কল্পক্ষয় কালপর্যন্ত কুম্ভীপাক নরকে পচতে থাকে৷

গীতার্থং বাচ্য মানং যো ন শৃণোতি সমাসতঃ৷
স শূকরভবাং যোনিমনেকামধিগচ্ছতি ॥৭৭॥
অর্থ:সম্যক রূপে গীতার অর্থ কীর্তন করলেও যে ব্যক্তি তা শ্রবণ করে না, সে পুনঃ পুনঃ শূকরযোনি প্রাপ্ত হয়৷

চৌর্য্যং কৃত্বা চ গীতায়াঃ পুস্তকং যঃ সমানয়েৎ৷
ন তস্য সফলং কিঞ্চিৎ পঠনঞ্চ বৃথা ভবেৎ ॥৭৮॥
অর্থ:গীতা-পুস্তক যে ব্যক্তি চুরি করে আনে, তার কিছুই সফল হয় না, এবং পাঠও বৃথা হয়ে যায়৷

যঃ শ্রুত্বা নৈব গীতাঞ্চ মোদতে পরমার্থতঃ৷
নৈব তস্য ফলং লোকে প্রমত্তস্য য্থা শ্রমঃ ॥৭৯॥
অর্থ:যে ব্যক্তি গীতা শ্রবণ করেও পরমার্থত আনন্দ পায় না, পাগলের পরিশ্রমের মতো সে কোন ফলই পায় না৷

গীতাং শ্রুত্বা হিরণ্যঞ্চ ভোজ্যং পট্টাম্বরং তথা৷
নিবেদয়েৎ প্রদানার্থং প্রীতয়ে পরমাত্মনঃ ॥৮০॥
অর্থ: ভগবানের প্রীতির জন্য গীতা শ্রবণ করে সুবর্ণ, ভোজ্য, পট্টবস্ত্র বৈষ্ণব ব্রাহ্মণকে নিবেদন করা কর্তব্য৷

বাচকং পূজয়েদ্ভক্ত্যা দ্রব্যবস্ত্রাদ্যুপস্করৈঃ৷
অনেকৈর্বহুধা প্রীত্যা তুষ্যতাং ভগবান্ হরি ॥৮১॥
অর্থ:ভগবান শ্রীহরির প্রীতির জন্য গীতা পাঠককে বহুপ্রকার দ্রব্য বস্ত্রাদি উপচার-দ্বারা ভক্তিপূর্বক পূজা করা উচিত৷

সূত উবাচ
মাহাত্ম্যমেতদগীতায়াঃ কৃষ্ণপ্রোক্তং পুরাতনম্৷
গীতান্তে পঠতে যস্তু যথোক্তফলভাগ্ ভবেৎ ॥৮২॥
অর্থ:সুত গোস্বামী বললেন- ভগবান শ্রীকৃষ্ণ-কথিত এই সনাতন গীতামাহাত্ম্য, যিনি গীতাপাঠান্তে পাঠ করেন, তিনি যথোক্ত ফলভাগী হন৷

গীতায়াঃ পঠনং কৃত্বা মাহাত্ম্যং নৈব যঃ পঠেৎ৷
বৃথা পাঠফলং তস্য শ্রম এব উদাহৃতঃ ॥৮৩॥
অর্থ:গীতাপাঠ করে যিনি মাহাত্ম্য পাঠ না করেন, তাঁর পাঠফল বৃথা, পণ্ডশ্রম হয়৷

এতন্মাহাত্ম্যসংযুক্তং গীতাপাঠ করোতি যঃ৷
শ্রদ্ধয়া যঃ শৃণোত্যেব পরমাং গতিমাপ্নুয়াৎ ॥৮৪॥
অর্থ: মাহাত্ম্য-সংযুক্তং গীতা যিনি শ্রদ্ধাপূর্বক পাঠ বা শ্রবণ করেন, তিনি পরমাগতি প্রাপ্ত হন ৷

শ্রুত্বা গীতামর্থযুক্তাং মাহাত্ম্য যঃ শৃণোতি চ৷
তস্য পুণ্যফলং লোকে ভবেৎ সর্বসুখাবহম্ ॥৮৫॥
অর্থ:যে ব্যক্তি শ্রদ্ধাপূর্বক অর্থযুক্ত গীতা শ্রবণ করে গীতা-মাহাত্ম্য শ্রবণ করেন, ইহলোকে তাঁর পুণ্যফল সর্বসুখের কারণ হয়ে থাকে৷

 

শ্রীশঙ্করাচার্য প্রণীত গীতা-মাহাত্ম্য

গীতাশাস্ত্রমিদং পুণ্যং যঃ পঠেৎ প্রয্তঃ পুমান্ ৷
বিষ্ণোঃ পদমবাপ্নোতি ভয়শোকাদিবর্জিতঃ ॥১
অর্থ: শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতার নির্দেশকে য্থাযথভাবে অনুসরণ করতে পারলে, অতি সহজেই সমস্ত ভয় ও উদ্বেগ থেকে মুক্ত হওয়া যায় ৷ এই জীবনে ভয় ও শোকাদি বর্জিত হয়ে পরবর্তী জীবনে চিন্ময় স্বরূপ অর্জন করা যায় ৷

গীতাধ্যায়্নশীলস্য প্রাণায়্মপরস্য চ ৷
নৈব সন্তি হি পাপানি পূর্বজন্ম কৃতানি চ ॥২
অর্থ: কেউ যদি আন্তরিকভাবে এবং অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ভগবদগীতা পাঠ করে, তাহলে ভগবানের করুণায় তার অতীতের সমস্ত পাপ কর্মের ফল তাকে প্রভাবিত করে না ৷

মলিনে মোচনাং পূংসাং জলস্নানং দিনে দিনে৷
সকৃদ্ গীতামৃতস্নানং সংসার মলনাশনম্ ॥৩
অর্থ: প্রতিদিন জলে স্নান করে মানুষ নিজেকে পরিচ্ছন্ন করতে পারে, কিন্তু কেউ যদি ভগবদ্ গীতার গংগাজলে একটি বারও স্নান করে, তাহলে তার জড় জীবনের মলিনতা একেবারেই বিনষ্ট হয়ে যায়৷

গীতা সুগীতা কর্তব্যা কিমনৈঃ শাস্ত্রবিস্তরৈঃ৷
যা স্বয়ং পদ্মনাভস্য মুখপদ্মাদ্ বিনিঃসৃতা॥৪
অর্থ: যেহেতু ভগবদ্ গীতার বাণী স্বয়ং পরম পুরুষোত্তম ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী, তাই এই গ্রন্থ পাঠ করলে আর অন্য কোন বৈদিক সাহিত্য পড়বার দরকার হয় না৷ গভীর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিয়মিতভাবে ভগবদ্ গীতা শ্রবণ ও কীর্তন করলে আমাদের অন্তর্নিহিত ভগবদ্ভক্তির স্বাভাবিক বিকাশ হয়৷ বর্তমান জগতে মানুষেরা নানা রকম কাজে এতই ব্যস্ত থাকে যে, তাদের পক্ষে সমস্ত বৈদিক সাহিত্য পাঠ করা সম্ভব নয়৷ সমস্ত বৈদিক সাহিত্য পড়বার প্রয়োজনও নেই৷ এই একটি গ্রন্থ ভগবদ্ গীতা পাঠ করলেই মানুষ সমস্ত বৈদিক জ্ঞানের সারমর্ম উপলব্ধি করতে পারবে, কারণ ভগবদ্ গীতা হচ্ছে বেদের সার এবং এই গীতা স্বয়ং ভগবানের মুখনিঃসৃত উপদেশ বাণী৷

ভারতামৃতসর্বস্বং বিষ্ণুবক্ত্রাদ্ বিনিঃসৃতম্৷
গীতাগঙ্গোদকং পীত্বা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে॥৫
অর্থ: গঙ্গাজল পান করলে অবধারিত ভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, আর যিনি ভগবদ্ গীতার পুণ্য পীযুষ পান করেছেন, তাঁর কথা আর কি বলবার আছে? ভগবদ্ গীতা হচ্ছে মহাভারতের অমৃত রস, যা আদিবিষ্ণু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলে গেছেন৷ ভগবদ্ গীতা পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত, আর গঙ্গা ভগবানের চরণপদ্ম থেকে উদ্ভূত বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ ভগবানের মুখ ও পায়ের মধ্যে অবশ্য কোন পার্থক্য নেই৷ তবে আমাদের এটি বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, ভগবদ্ গীতার গুরুত্ব গঙ্গার চেয়েও বেশি৷

সর্বোপনিষদো গাবো দোগ্ধা গোপালনন্দনঃ৷
পার্থো বৎসঃ সুধীর্ভোক্তা দুগ্ধং গীতামৃতং মহৎ॥৬
অর্থ: এই গীতোপনিষদ্ ভগবদ্ গীতা সমস্ত উপনিষদের সারাতিসার এবং তা ঠিক একটি গাভীর মতো এবং রাখাল বালকরূপে প্রসিদ্ধ ভগবান শ্রীকৃষ্ণই এই গাভীকে দোহন করেছেন৷ অর্জুন যেন গোবৎসের মতো এবং জ্ঞানীগুণী ও শুদ্ধ ভক্তেরাই ভগবদ্ গীতার সেই অমৃতময় দুগ্ধ পান করে থাকেন৷

একং শাস্ত্রং দেবকীপুত্রগীতম্
একো দেবো দেবকীপুত্র এব৷
একো মন্ত্রস্তস্য নামানি যানি
কর্মাপ্যেকং তস্য দেবস্য সেবা ॥৭
অর্থ: বর্তমান জগতে মানুষ আকুল ভাবে আকাংক্ষা করছে একটি শাস্ত্রের, একক ভগবানের, একটি ধর্মের এবং একটি বৃত্তির৷ তাই, একং শাস্ত্রং দেবকীপুত্রগীতম্- সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য সেই একক শাস্ত্র হোক ভগবদ্ গীতা৷ একো দেবো দেবকীপুত্র এব- সমগ্র বিশ্বচরাচরের একক ভগবান হোন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ৷ একো মন্ত্রস্তস্য নামানি- একক মন্ত্র, একক প্রার্থনা, একক স্তোত্র হোক তাঁর নাম কীর্তন-
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে৷
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥
এবং কর্মাপ্যেকং তস্য দেবস্য সেবা- সমস্ত মানুষের একটিই বৃত্তি হোক- পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা৷

 

শ্রীল ব্যাসদেব কৃত গীতা-মাহাত্ম্য

গীতা সুগীতা কর্তব্যা কিমনৈঃ শাস্ত্রবিস্তরৈঃ৷
যা স্বয়ং পদ্মনাভস্য মুখপদ্মাদ্বিনিঃসৃতা ॥১॥

সর্বশাস্ত্রময়ী গীতা সর্বদেবময়ী য্তঃ৷
সর্বধর্মময়ী য্স্মাত্তস্মাদেতাং সমভ্যসেৎ ॥২॥
অর্থ (১-২) : গীতা স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের মুখপদ্ম থেকে নিঃসৃত হয়েছেন ৷ সেই গীতা সুন্দরভাবে পাঠ করতে হবে৷ অন্যান্য বহু রকমের শাস্ত্রের প্রয়োজন নেই৷ যেহেতু শ্রীভগবদ্ গীতা সর্বশাস্ত্রময়ী, সর্বদেবময়ী, সুতরাং গীতা অভ্যাস করা একান্ত কর্তব্য৷

শালগ্রামশিলাগ্রে তু গীতাধ্যায়ং পঠেত্তু যঃ ৷
মন্বন্তরসহস্রাণি বসতে ব্রহ্মণঃ পুরে ॥৩॥

হ্ত্বা হ্ত্বা জগৎ সর্বং মুষিত্বা সচরাচরম্৷
পাপৈর্ন লিপ্যতে চৈব গীতাধ্যায়ী কথঞ্চন ৷
তেনেষ্টং ক্রতুভিঃ সর্বৈর্দত্তং তেন গবাযুতম্ ॥৪॥

গীতামভ্যস্যতা নিত্যং তেনাপ্তং পদমব্যয়্ম্ ॥৫॥
অর্থ (৩-৫): যিনি শাল গ্রাম শিলার সামনে গীতাধ্যায় পাঠ করেন, তিনি সহস্র মন্বন্তর ব্রহ্মলোকে বাস করেন৷ যদি কোন ব্যক্তি বারংবার জগৎ নাশ বা চৌর্য-কর্ম করে, এমন জনও গীতাধ্যায়ী হলে কোন প্রকার পাপে লিপ্ত হ্য় না ৷উপরন্তু তিনি সর্বজ্ঞ হন এবং দ্শহাজার গো-দানের ফল লাভ করেন৷প্রত্যহ গীতাধ্যায়ী ব্যক্তি অভয়্পদ প্রাপ্ত হন ৷

গীতাধ্যায়ং পঠেদ্ যস্ত্ত শ্লোকং শ্লোকার্ধমেব বা৷
ভবপাপ বিনির্মুক্তো যাতি বিষ্ণোঃ পরং পদম্ ॥৬॥
অর্থ: যিনি গীতার একটি অধ্যায়, একটি শ্লোক কিংবা অর্ধ শ্লোক মাত্র পাঠ করেন, তিনি সংসার-পাপ থেকে মুক্ত হয়ে বিষ্ণুধামে গমন করেন৷

যো নিত্যং বিশ্বরূপাখ্যমধ্যায়ং পঠতি দ্বিজঃ৷
বিভূতিং দেবদেবস্য তস্য পুণ্যং বদাম্যহম্ ॥৭॥

বেদৈরধীতৈর্যৎ পুণ্যং সেতিহাসৈঃ পুরাতনৈঃ৷
শ্লোকেনৈকেন তৎ পুণং লভতে নাত্র সংশয়ঃ ॥৮॥

আব্রহ্মস্তম্ভপর্যন্তং জগত্তৃপ্তিং করোতি সঃ ৷
বিশ্বরূপং সদাধ্যায়ং বিভূতিঞ্চ পঠেত্তু যঃ ॥৯॥
অর্থ (৭-৯): যে ব্রাহ্মণ শ্রীভগবদ্ গীতার শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ নামক একাদ্শ অধ্যায় ও বিভূতিযোগ নামক দশম অধ্যায় নিত্য পাঠ করেন, আমি এখন তাঁর পুণ্যের কথা বলছি৷সমগ্র বেদ, ইতিহাস, পুরাণ অধ্যায়্ন করলে যে পুণ্য হয় এক শ্লোকেই সেই পুণ্য হয়ে থাকে৷ যিনি প্রতিদিন বিশ্বরূপ ও বিভূতিযোগ নামক অধ্যায় পাঠ করেন তিনি আব্রহ্ম স্তম্ভ পর্যন্ত জগতের প্রীতি সাধন করেন৷

অহন্যহনি যো মর্ত্যো গীতাধ্যায়ং পঠেত্তু বৈ ৷
দ্বাত্রিংশদপরাধাংস্ত্ত ক্ষমতে তস্য কেশবঃ ॥১০॥

লিখিত্বা বৈষ্ণবানাঞ্চ গীতাশাস্ত্রং প্রযচ্ছতি
দিনে দিনে চ য্জতে হরিং চাত্র ন সংশয়ঃ ॥১১॥

চতুর্ণামেব বেদানাং সারমুদ্ধৃত্য বিষ্ণুনা৷
ত্রৈলোক্যস্যোপকারায় গীতাশাস্ত্রং প্রকাশিতম্ ॥১২॥
অর্থ (১০-১২): কেশব প্রত্যহ গীতাধ্যায়ী ব্যক্তির বত্রিশ প্রকার অপরাধ ক্ষমা করেন৷ যিনি গীতাশাস্ত্র লিখে বৈষ্ণবকে প্রদান করেন তিনি প্রত্যহ শ্রীহরিপূজার ফল প্রাপ্ত হন সন্দেহ নেই৷ বিষ্ণু চারি বেদের সার উদ্ধার করে ত্রিভুবনের উপকারের জন্য এই গীতাশাস্ত্র প্রকাশ করেছেন৷

ভারতামৃতসর্বস্বং বিষ্ণোর্বক্ত্রাদ্বিনিঃসৃতম্৷
গীতা-গঙ্গোদকং পীত্বা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে ॥১৩॥

ধর্মং চার্থঞ্চ কামঞ্চ মোক্ষঞ্চাপীচ্ছতা সদা
শ্রোতব্যা পঠনীয়া চ গীতা কৃষ্ণমুখোদগতা ॥১৪॥
অর্থ (১৩-১৪): মহাভারতের সারসুধা, বিষ্ণুমুখনির্গত গীতারূপ গঙ্গাবারি পান করলে পুনর্জন্ম হয় না৷ চতুর্বর্গ ফলাভিলাষী ব্যক্তির প্রত্যহই কৃষ্ণমুখোবিনির্গত গীতা শ্রবণ ও পাঠ করা কর্তব্য৷

যো নরঃ পঠতে নিত্যং গীতাশাস্ত্রং দিনে দিনে ৷
বিমুক্তঃ সর্বপাপেভ্যো যাতি বিষ্ণোঃ পরং পদম্ ॥১৫॥
অর্থ: যিনি নিত্যই গীতা পাঠ করেন, তিনি সবরকমের পাপ থেকে মুক্ত হয়ে শ্রীবিষ্ণুর পরম ধামে গমন করেন৷

 

প্রচলিত গীতা-মাহাত্ম্য

শ্রীভগবান উবাচ
গীতা মে হৃদয়ং পার্থ গীতা মে সারমুত্তমম্৷
গীতা মে জ্ঞানমত্যুগ্রং গীতা মে জ্ঞানমব্যয়্ম্ ॥৪৪॥

গীতা মে চোত্তমং স্থানং গীতা মে পরমং পদম্৷
গীতা মে পরমং গুহ্যং গীতা মে পরমো গুরু ॥৪৫॥

গীতাশ্রয়েহ্হং তিষ্ঠামি গীতা মে পরমং গৃহং৷
গীতাজ্ঞানং সমাশ্রিত্য ত্রিলোকীং পালয়াম্যহম্ ॥৪৬॥

গীতা মে পরমা বিদ্যা ব্রহ্মরূপা ন সংশয়ঃ৷
অর্ধমাত্রাহরা নিত্যমনির্বাচ্যপদাত্মিকা ॥৪৭॥

গীতা নামানি বক্ষামি গুহ্যানি শৃণু পাণ্ডব৷
কীর্তনাৎ সর্বপাপানি বিলয়ং যান্তি তৎক্ষণাৎ ॥৪৮॥

গঙ্গা গীতা চ সাবিত্রী সীতা সত্যা পতিব্রতা৷
ব্রহ্মাবলির্ব্রহ্মবিদ্যা ত্রিসন্ধ্যা মুক্তিগেহিনী ॥৪ঌ॥

অর্ধ মাত্রা চিদা নন্দা ভবঘ্নী ভ্রান্তিনাশিনী৷
বেদত্রয়ী পরানন্দা তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জরী ॥৫০॥

ইত্যেতানি জপেন্নিত্যং নরো নিশ্চলমানসঃ৷
জ্ঞান সিদ্ধিং লভেন্নিত্যং তথান্তে পরমং পদম্ ॥৫১॥

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.