ঈশ্বরের প্রার্থনা করার বা ডাকার কোনও বাঁধাধরা নিয়ম হয় না। ভক্তিই হল মূল মন্ত্র। তবে বৈদিক মতে পুজো-অর্চনার তো বিধিবদ্ধ নিয়ম আছেই। তা ছাড়া কালীপুজোর দিন পুজোর জন্য উপবাস থেকে জপতপ ইত্যাদির সুফল পাওয়া যায়। মা কালী সময়ের প্রতীক। অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার জন্য। এখন দেখে নেওয়া যাক কী ভাবে মা কালীর প্রার্থনা করলে সুফল পাওয়া যাবে। এ ছাড়া গৃহে মা কালীর চিত্র বা মূর্তির সামনে বিভিন্ন পুজোর দ্রব্যাদি-সহ সহজ প্রার্থনার কিছু মন্ত্র-
প্রদীপ বা মোমবাতি প্রদানের মন্ত্র-
‘এষ ধুপঃ ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ।’
কর্পূর প্রদানের মন্ত্র-
‘ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ আরাত্রিকম্ সমর্পয়ামি।’
দুধ-স্নানাদি প্রদানের মন্ত্র-
‘ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ পয়স্নানাম্ সমর্পয়ামি।’
দই-স্নানাদি প্রদানের মন্ত্র-
‘ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃদধিস্নানাম্ সমর্পয়ামি।’
পঞ্চামৃত-সহ স্নানের দ্রব্যাদি প্রদানের মন্ত্র-
‘ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ পঞ্চামমৃত স্নানম্ সমর্পয়ামি।’
গঙ্গাজল স্নানের প্রদানের মন্ত্র-
‘ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ গঙ্গাস্নানম্ সমর্পয়ামি।’
পঞ্চফল প্রদানের মন্ত্র-
‘ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ পঞ্চফলম্ সমর্পয়ামি।’
পুষ্প প্রদানের মন্ত্র-
‘এষ গন্ধপুস্পে ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ।’
প্রণাম মন্ত্র-
‘ওঁ ক্রীং ক্রীং হৃং হৃং হিং হিং দক্ষিণে কালীকে ক্রীং ক্রীং ক্রীং হৃং হৃং হ্রীং হ্রীং হ্রীং স্বহা।
ওঁ কালী কালী মহাকালী কালীকে পাপহারিণী
ধর্মার্থমোক্ষদে দেবী নারায়ণী নমোস্তুতে।’
এরপর জপ একশো আটবার করা যায় এই মন্ত্রে-
‘ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ।’
মা কালি পুজোর কিছু মন্ত্রঃ
অনুষ্ঠান সামগ্রী
মহাকালির চিত্র, পরনে শ্বেত বস্ত্র, ভোগ ও নৈবেদ্য, ধুপ ও দীপ, ফুল ফল। সাধনা কালে উপবাস থেকে সন্ধ্যাকালে হাল্কা ফল মুল ভোজন করবেন । পূর্ণ ব্রহ্মচর্য পালন করবেন । অনুষ্ঠানের আগে স্নান আবশ্যক তার পর স্বচ্ছ বস্ত্র ধারন করবে । আসনে কালি মূর্তি স্থাপন তার সামনে ধুপ দীপ জ্বালাবে আর নৈবেদ্য রাখবে । সর্ব প্রথম গুরু কে স্মরণ করে মা কালির ধ্যান করবে । ধ্যান করার সময় মন বশে রেখে এক দৃষ্টি কালির দিকে তাকিয়ে থাকবেন , কালি আরাধনার শক্তিলাভ , দুঃখ , শোক , রোগ , মারীভয় নিবারণ ,গ্রহ শান্তি , দারিদ্রতা নাশ , শত্রু ক্ষয় , সর্বপরি সিদ্ধি লাভ , মুক্তি লাভের জন্য কালী পুজা করা । শাস্ত্রে দেখা যায় কালী আরাধনা ব্যতিত মুক্তি অসম্ভব।
প্রণাম মন্ত্র
কপালিনীদূগা শিবা সমাধ্যাতীসাহা
সুধা নমস্তুতে।
ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে , নিবেদয়ামি চাত্মানংত্বং গতিঃ পরমেশ্বরঃ ।
ওঁ কালি কালি মহাকালি কালিকে পাপহারিনি দেবী নারায়ণী নমস্তুতে ,
ধ্যান মন্ত্র
হাস্যযুক্তাং ত্রিনেত্রাঞ্চ কপালকর্ত্তৃকাকরাম্।।
মুক্তকেশীং লোলজিহ্বাং পিবন্তীং রুধিরং মুহু।
চতুর্ব্বাহু যুতাং দেবীং বরাভয়করাং স্মরেৎ।।
মায়ের গায়ত্রী মন্ত্র
জপের মন্ত্র
দক্ষিণ কালিকে ক্রীং ক্রীং ক্রীং হুং হুং হুং স্বাহা
আচমন
পুস্প শুদ্ধি
পুজা মন্ত্র
এতৎ সচন্দন পুষ্পম ওঁ গণেশায় নমঃ,
এষ ধুপ ওঁ গণেশায় নমঃ,
এষ দীপ ওঁ গণেশায় নমঃ,
এতন নৈবেদ্য ওঁ গণেশায় নমঃ।
জপঃ ওঁ গণেশায় নমঃ
এষ গন্ধ ওঁ শ্রী সূর্যায় নমঃ,
এতৎ সচন্দনপুস্পম ওঁ শ্রী সূর্যায় নমঃ,
এষ ধুপ ওঁ শ্রীসূর্যা নমঃ,
এষ দীপ ওঁ শ্রী সূর্যায় নমঃ,
এতন নৈবেদ্যম ওঁ শ্রী সূর্যায় নমঃ ।
সূর্যের ধ্যান
পদ্মদ্বয়াভয়রবান দধতং করাজৈর মানিক্যমৌলিমরুণাঙ্গরুচিং ত্রিনেত্রম ।
কালীকবচম্
তথাপি হৃদয়ে শল্যমস্তি দেবি কৃপাং কুরু।।
কবচন্ত মহাদেবী কথয়সানুকম্পা।
যদি নো কথ্যতে মাতব্বিমুঞ্চামি তদা তনুম।।
দেব্যুবাচ: শংকাপি জায়তে বৎস তব স্নেহাৎ প্রকাশিতম।
ন বক্তব্যং ন দ্রষ্টব্যমতি গুহ্যতমং মহৎ।।
কালিকা জগতাং মাতা শোকদুঃখাদি বিনাশিনী।
বিশেষত কলি যুগে, মহাপাতকহারিণী।।
কালী মে পুরুত: পাঠু পৃষ্ঠতশ্চ কপালিনী।
কুল্বা মে দক্ষিনে পাতু করণৌ চগ্রোপ্রভামতা।।
বদনং পাতু মে দীপ্তা নীলা চ চিবুকং সদা।
ঘনা গ্রীবাং সদা পাতু বলাকা বাহুযুগ্মকম।।
মাত্রা পাতু করদ্বন্দং বক্ষো মুদ্রা সদাবতু।
মিতা পাতু স্তনদ্বন্দং যোনিং মন্ডল দেবতা।
ব্রাম্মী মে জঠরং পাতু, নাভিং নারায়ণীং তথা।
ঊরু মাহেশ্মরী নিত্যং চামুন্ডা পাতু লিঙ্গকম।
কৌমারী চ কটিং পাতু তথৈব জানুযুগ্মকম।
অপরাজিতা পাদৌ মে বারাহী পাতু চাঙ্গুলীঃ।
সন্ধিস্থানং নারসিংহী পত্রস্থা দেবতাবতু ।।
রক্ষাহীনঞ্চ যৎ স্থানং বর্জ্জিতং কবচেন তু।
তৎ সর্ব্বং রক্ষ মে দেবী কালিকে ঘোর দক্ষিণে।।
ঊর্দ্ধং-মধ্যস্তথা দিক্ষু পাতু দেবী স্বয়ং বপুঃ।।
হিংস্রেভ্যঃ সর্ব্বদা পাতু সাধকঞ্চ জলাধিকাৎ।
দক্ষিণা কালিকে দেবী ব্যাপকত্তে সদাবতু।
ইদং কবচমজ্ঞাতা যো জপেদ্দেবদক্ষিনাম
ন পুজাফলমাপ্নোতি বিঘ্নস্তস্য পদে পদে।
কবচেনাবৃতো নিত্যং যত্র তত্রৈব গচ্ছতি
তত্র তত্রভয়ং তস্য ন ক্ষোভং বিদ্যতে ক্কচিৎ।