ভগবান বিষ্ণুর চার হাত, তাতে রয়েছে শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্ম। এই শঙ্খ হল বিজয়ের প্রতীক, ধনের প্রতীক, অভিষ্ট লাভের এবং মঙ্গলের প্রতীক। কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের প্রারম্ভে পঞ্চ পাণ্ডবগণ এবং শ্রীকৃষ্ণ শঙ্খ বাজিয়েছিলেন।
বলা হয় দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ যুগ্ম ভাবে লক্ষ্মী–নারায়ণের কৃপাধন্য। তবে এই শঙ্খ বাদ্যশঙ্খ হিসাবে ব্যবহার হয় না। চমৎকারী দৈববস্তু হিসাবেই এর ব্যবহার। একদম ছোট আকার থেকে কয়েক কিলোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে এই শঙ্খ।
যে কোনও পূর্ণিমা তিথিতে এই শঙ্খ স্থাপন করা শুভ। এই শঙ্খের জল গোহত্যা, শিশুহত্যার মতো গুরু পাপ থেকেও মুক্তি দেয়। অর্থকষ্ট লাঘবে, বাস্তুশুদ্ধিতে ও মরণাপন্ন রোগীকে শান্তিদানে এর ব্যবহার হয়ে থাকে।
অনেক বাড়ি ভুল ভাবে তৈরী হওয়ায় ফলে বাস্তুদোষ থাকে। এই বাস্তুদোষ কাটাতে দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ খুব উপকারী। গৃহদোষ, বাস্তুদোষের ফলে সৃষ্টি হওয়া অনর্থ থেকে মুক্তি পেতে দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ অপরিহার্য।
এই শঙ্খের জল আঙুলে নিয়ে গৃহের প্রতিটি দেওয়ালে বা দরজার উপরে ছিটিয়ে দিলে, অত্যন্ত শুভ ফল পাওয়া যায়।
অর্থ কষ্ট দূর করতে শঙ্খের স্থাপন প্রক্রিয়া
এই শঙ্খ স্থাপনের জন্য পঞ্চামৃত বিশেষ প্রয়োজন। প্রথমে শঙ্খটিকে পঞ্চামৃত দিয়ে তাম্রপাত্রে লাল কাপড় বিছিয়ে শঙ্খটিকে রেখে তাতে আতপ চাল দিন।চালের মধ্যে একটি গোটা সুপারি ও একটি লক্ষ্মী গণেশ মুদ্রা রাখুন।
এবার এই মন্ত্রটি উচ্চারণে শঙ্খের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করুন (হরি ওঁ হরি ওঁ হরি ওঁ)। সাধ্যমত নৈবেদ্য, মিষ্টান্ন, ঘৃত, প্রদীপ, ধূপ, কর্পূর দিয়ে আরতি করে পূজা করুন। শঙ্খে একটি লাল পদ্ম অর্পণ করুন।
তারপর বাড়ির ঠাকুরের স্থানে এটিকে রেখে প্রতি দিন পূজা করতে পারেন অথবা নতুন লাল চেলিতে শঙ্খটিকে জড়িয়ে টাকা রাখার স্থানে বা আলমারির লকারে রেখে দিন। অর্থ কষ্ট দূর করতে অবশ্যই সুফল পাবেন। পুরোহিত দ্বারা এই শঙ্খ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
অতি প্রাচীন কাল থেকেই এই শঙ্খের ব্যবহার চলে আসছে। অতএব সর্ববিজয় লাভে দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ প্রতিটি মানুষের ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে যাদের বড় ব্যবসা রয়েছে তাদের দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ ব্যবসাক্ষেত্রে স্থাপন করা উচিত।
দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ ঘরে বা ব্যবসাক্ষেত্রে থাকলে, তার গৃহ বা ব্যবসাক্ষেত্রে স্বয়ং ভগবান বিষ্ণু লক্ষ্মীকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থান করেন। তবে আসল দক্ষিণাবর্ত সচরাচর মেলে না। এই বস্তু খুবই দুষ্প্রাপ্য ও দুর্মূল্য।
সোর্সঃ আনন্দবাজার