জেনে নিন সিদ্ধপুরুষ জয় বাবা লোকনাথ এর অজানা কাহিনী

হিমালয়ের পাদদেশে ভিন্ন ভিন্ন গুহায়; জঙ্গলে কঠিন সাধনায় অতিবাহিত করেন প্রায় ৪০ বছর। গুরুদেবের আদেশ ও নির্দেশ এক বাক্যে পালন করেন লোকনাথ ও বেণীমাধব; দুই ব্রহ্মচারী বন্ধু। হিমালয়ে থাকাকালীন প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে; কঠিনতম তপস্যার মাধ্যমে লাভ করেন পরম সত্য।

কিন্তু নিজের প্রচারবিমুখতার কারনে সেই কষ্টের কথা; কাউকে কিছু বলে যাননি। শুধু বলতেন-“মনে হয় এই বিরাট বিশ্বসৃষ্টির মধ্যে আমি ওতপ্রোত হয়ে রয়েছি; আমার মধ্যেই বিরাজ করছে সমগ্র সৃষ্টি, আর সমগ্র সৃষ্টির আদি ও অন্তে আমিই শ্বাশত হয়ে রয়েছি”।

তিনি বলতেন; “সমাধিস্থ অবস্থায় অবস্থানকালে কত বরফ এই শরীরের উপর জমেছে; আবার গলে বরফ হয়ে গেছে; তার খেয়াল করার মতন শরীর-মনের চেতনা তখন আমার কোথায়”।

বাবা লোকনাথ ও বেনীমাধবের বয়স যখন ৯০ তখন গুরুর বয়স ১৫০। গুরু ভগবান গাঙ্গুলীর দেহত্যাগের সময় চলে আসায়; তিনি তার দুই শিষ্যকে নিয়ে আসেন; ভারতের শ্রেষ্ট মহাযোগী তৈলঙ্গ স্বামীর কাছে। তারপর দেহত্যাগ করেন ভগবান গাঙ্গুলী।

লোকনাথ ও বেণীমাধব প্রায় ২০ বছর কাটান; তৈলঙ্গ স্বামীর সঙ্গে তাঁর আশ্রমে। পৃথিবীর অনেক দেশ ভ্রমণ করে বেরান পায়ে হেঁটে। তৈলঙ্গ স্বামীর নির্দেশে – বেনীমাধবকে সঙ্গে নিয়ে বাবা লোকনাথ চলে যান তিব্বত। তিব্বত থেকে অরুনাচল; অরুনাচল থেকে আসাম।

আসামেই থেকে যায় বেনীমাধব। এখানেই ১৪০ বছরের বন্ধুত্বের চিরবিদায় হয়। লোকনাথ বাবা চলে আসেন চন্দ্রনাথ পাহাড় (সীতাকুন্ডু), চট্টগ্রামে।

বাবা লোকনাথকে নিয়ে আছে অনেক গল্প। ধর্মপ্রচারক বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী চন্দ্রনাথ পাহাড়ে গাছের নীচে ধ্যানমগ্ন ছিলেন; হঠাৎ চোখ খুলে দেখেন চারিদিকের আগুনের লেলিহান শিখা; প্রচন্ড ধোঁয়ায় নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।

অজ্ঞান হবার মুহুর্তে দেখতে পান; এক দীর্ঘদেহী উলঙ্গ মানুষ তাকে কোলে তুলে নিচ্ছেন। যখন জ্ঞান ফিরে পান দেখেন; আসে-পাশে কোন জনমানব নেই । তিনি একা পাহাড়ের নিচে শুয়ে আছেন। পরবর্তীকালে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী নামি ধর্মপ্রচারক হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন।

ভারত এবং বাংলাদেশে তার অসংখ্য ভক্ত ছিল। তিনি যখন নারায়নগঞ্জ এর বারদী আসেন; তখন বাবা লোকনাথকে দেখে চিনতে পারেন। বুঝতে পারেন, ইনিই তার জীবন বাঁচিয়েছিলেন।

এরপর সারা ভারত এবং বাংলাদেশে প্রচারবিমুখ বাবা লোকনাথের অসামান্য যোগশক্তির কথা; প্রচার করে বেড়ান এই বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী। তখন থেকেই মানুষ বাবা লোকনাথ সম্পর্কে জানতে পারেন।

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.