দীপাবলির রাতেই লক্ষ্মীলাভ কোন উপায়ঃ
বাড়িতে লক্ষ্মীর আগমন নিশ্চিত করতে অনেকেই বেশ কিছু দিন ধরে প্রস্তুতি নেন। ঘর ঝাড়পোছ করে সাফসুতরো করেন। সনাতন শাস্ত্র অবশ্য কিছু সংকেতের উল্লেখ করেছে, যাকে শুভ মনে করা হয়। দীপাবলির রাতে অর্থাগমের ইঙ্গিত পেতে পারেন আপনিও। কিছু প্রাণী এইদিন প্রত্যক্ষ করলে লক্ষীলাভ নিশ্চিত বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এই চার ঘটনা আপনার সঙ্গে ঘটলে বুঝবেন দীপাবলির রাতে আপনার ঘরে লক্ষ্মী এল:
লক্ষ্মীপ্যাঁচার দর্শনঃ দ্বীপান্বিতা আমাবস্যার দিনে লক্ষ্মীপ্যাঁচা দেখলে সারাবছর অর্থাগমের সুযোগ থাকে।
বেড়ালের দুধ খাওয়াঃ এই দিন ঘরের পোষ্য বেড়াল যদি দুধ খায় তবে তা সাক্ষাৎ মা লক্ষ্মীর আগমনের সংকেত।
টিকটিকির ডাকঃ শাস্ত্র মতে, দীপাবলির দিন টিকটিকি দেখা বা তার ডাক শোনা শুভ সংকেত।
ইঁদুর-দর্শনঃ দীপাবলির দিন ঘরে মেঠো ইঁদুর বা ছুঁচো দেখতে পাওয়াও শুভ সংকেত বলে মনে করেন অনেকে।
দীপাবলিতে বাড়িতে মেনে চলুন বাস্তুর কয়েকটি পরামর্শ
দীপাবলিতে ভাগ্য ফেরাতে অনেকেই অনেক কিছু করেন। নতুন জিনিস কেনা, প্রিয়জনকে উপহার দেওয়া, মিষ্টিমুখ করানোর মতো রীতি তো অনেকেই পালন করেন। কিন্তু বাস্তু মতে, বাড়ির ভিতরে কয়েকটি ছোট পরিবর্তন দীপাবলিতে ভাগ্য ফেরাতে খুবই সাহায্য করে।
‘মহাবাস্তু’ বইয়ের লেখক বাস্তু গুরু খুশদীপ বনশলও দীপাবলিতে ভাগ্য ফেরানোর জন্য কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে সেই নরকমই চারটি পরামর্শের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
• বাড়ির উত্তর-পূর্ব দিকটি পরিষ্কার করতে হবে। বাড়ির ওই অংশে যাতে কোনও লাল রংয়ের বস্তু না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
• বাড়ির পশ্চিম দিকে মা লক্ষ্মী এবং শ্রী গণেশের রুপোর মূর্তি রাখলে প্রতিবন্ধকতা দূর হবে, আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি হবে।
• বাড়ির উত্তর দিকে সবুজ রংয়ের ফুলদানিতে টাটকা ফুল রাখুন।
দীপাবলীতে অতিথি আপ্যায়ণ করুন মিষ্টি দিয়ে
যাঁরা নতুনত্বের পূজারী তাঁরা এবারের দীপাবলি উদযাপন করুন ফিউশন মিষ্টি দিয়ে। দীপাবলি প্রায় দোড়গোড়ায়আলোর উৎসবে মিষ্টি মাস্টফিফশন ডেজার্ট দিয়ে এবার অতিথি আপ্যায়ন করুন। জুতা-পাতলুন-টুপি যে দেশেরই হোক ক্ষতি নেই। কিন্তু দিল হিন্দুস্থানি হতেই হবে। যদিও এখন উৎসবে-অনুষ্ঠানে সবকিছুই মিলেমিশে একাকার। তারই ছোঁয়া পোশাকে, খাবারেও। ইন্দো-ওয়েস্টার্নের মিলিজুলিতে ফিউশন গানে, পোশাকে, মিষ্টিতেও। যাঁরা নতুনত্বের পূজারী তাঁরা এবারের দীপাবলি উদযাপন করুন ফিউশন মিষ্টি দিয়ে। অতিথিকে তাক লাগান গুলাব জামুন চিজ কেক, হট পনীর সন্দেশ পুডিং, জাফরান-ইলাইচি পান্নাকোট্টা, গুলকান্দ কাপকেক, ওয়াইল্ড বেরিস অ্যান্ড ল্যাভেন্ডার ক্ষীর দিয়ে। আমন্ত্রিত খুশি, আপনার মুখে হাসি, দীপাবলির রোশনাই দ্বিগুণ—সব মিলিয়ে উৎসবের মৌতাত জমজমাট।
৫ ফিউশন মিষ্টিতে বাজিমাত
১. গুলাব জামুন চিজ কেক রেসিপিঃ দেশির সঙ্গে বিদেশি, আধুনিকতার সঙ্গে আভিজাত্য যদি এক সুরে বাঁধা পড়ে তাহলেই যেকোনও জিনিস হয়ে ওঠে শিল্প। হতেই পারে সেটা খাবার। যেমন, গুলাব জামুন চিজ কেক। গুলাব জামুনের মিষ্টত্ব আর চিজ কেকের স্বাদ এক হয়ে জন্ম দেয় এই বিশেষ মিষ্টির। ওপরে গোলাপের পাপড়ি, তবক জড়ালেই কেয়াবাত।
২. হট পনীর সন্দেশ পুডিং রেসিপিঃ তাজা ফ্রুট সস আর ছানার যুগলবন্দি। তাই দিয়ে ছানার পুডিং। ওপরে বাদাম আর স্ট্রবেরির টপিং। ডিশ পুরো চেটেপুটে সাফ।
৩. জাফরান-ইলাইচি পান্নাকোট্টা রেসিপিঃ শেষ পাত জমাতে ওস্তাদ পান্না কোট্টা। এলাচ-জাফরান মেশানো এই মিষ্টি এবার থাক দীপাবলির স্পেশ্যাল রেসিপিতে।
৪. গুলকান্দ কাপকেক রেসিপি রেসিপিঃ দুধে চিনি মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিন। গোলাপজল ছড়িয়ে দিতে ভুলবেন না। এবার কাপ কেকের খোপে কেকের ওপরে ঢেলে ফ্রিজে ঠাণ্ডা করতে দিন। ওপরে ক্রিম দিয়ে গোলাপ ফুল এঁকে দিতে পারেন। জমে গেলে পরিবেশন করুন। জমজমাট টিফিন টাইম। পাবেন কাপ কেকের স্বাদ মিষ্টিতে।
৫. ওয়াইল্ড বেরিস অ্যান্ড ল্যাভেন্ডার ক্ষীর রেসিপিঃ বেরি আর ল্যাভেন্ডারের গন্ধ-স্বাদ এবার ভারতীয় পায়েসে। বেরির রস মেশান পায়েস নামানোর আগে। ল্যাভেন্ডার ছড়িয়ে দিন ওপরে। চেনা রেসিপি নতুন স্বাদে ধরা দেবে অতিথি আপ্যায়নে।
দীপাবলিতে মিষ্টি কেন খেতে হবে?
দীপাবলি উদযাপনের অন্যতম বড় অংশ হল নানা ধরনের মিষ্টি। সব ধরনের দীপাবলির মিষ্টি খাওয়া সম্পূর্ণ সুস্থ বিষয়। বাড়ির তৈরি লাড্ডু, হালুয়া এবং বরফি দীপাবলি উদযাপনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তাই আমাদের অবশ্যই এগুলি খাওয়া, প্রস্তুত করা শিখতে হবে এবং নতুন প্রজন্মের সাথেও ঐতিহ্য অনুযায়ী এই মিষ্টি তৈরির কৌশল বা জ্ঞান ভাগ করে নিতে হবে।
স্থানীয় মিষ্টির দোকান থেকে দীপাবলির মিষ্টি কিনুন
আপনার এলাকার স্থানীয় মিষ্টি বিক্রেতাদের কাছ থেকে আপনি লাড্ডু, বরফি ইত্যাদি মিষ্টি পেতে পারেন। দুপুরের খাবারের অংশ হিসাবেও মিষ্টি খাওয়া হয় দীপাবলিতে। সাধারণত থালার একেবারে মাঝে মিষ্টি রাখা হয়। ঐতিহ্যগতভাবে এবং সাংস্কৃতিকভাবে দীপাবলি উদযাপন করার এটাই পন্থা।
দীপাবলিতে মিষ্টিতে চিনি বেশি থাকলে কী করণীয়?
দীপাবলিতে ডায়াবেটিক মানুষ চিনির কথা চিন্তা করেই মিষ্টি খাওয়া এড়িয়ে যান। রক্তের চিনির মাত্রার ভারসাম্যের কথা ভেবেই তাঁরা উৎসবের বড় একটা অংশ থেকে নিজেদের দূরে রাখেন। বাড়িতে বানানো ঐতিহ্যগত মিষ্টিগুলি এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে এগুলিতে গ্লাইসমিক সূচক স্বাভাবিকভাবেই কম। এভাবে, ডায়াবেটিকরা বাড়িতে বানানো মিষ্টি খেতে পারে কারণ এটি রক্তে চিনির মাত্রা স্থিতিশীল রাখে।
অন্য খাবারের কম খেয়ে মিষ্টি দিয়ে পেট ভরানোর কথা না ভাবলেও চলবে। সাধারণত ৩ বা ৪ দিন ধরে চলে দীপাবলির উদযাপন। সুতরাং নিশ্চিন্তে মিষ্টি খান জমিয়ে।
সোর্সঃ সংগৃহিত