বিপদ নাশিনীর পাঁচালী

 

পূজার বিধি কথনঃ
নারদ মুনিরে জিজ্ঞাসে দেব কন্যাগণ।
বল প্রভু এ পূজার বিধির কথন।।
কখন কি ভাবে হয় বল পূজা বিধি।
কোন কোন দ্রব্য এতে চাই নিরবধি।।
কীর্ত্তি কথা শুনে মনে জাগে কৌতুহল।
সকলি জানিতে চাই দু:খ পেতে বল।।
দেবর্ষি শুনিয়া কহে পূজার নিয়ম।
আষাঢ়ের শুক্লষ্টমী দিন মনোরম।।
সুপারী অর্ঘ্য ও পান কদলী উত্তর।
সুপক্ক সুমিষ্ট ফল দিবে মনোরম।।

আনারস দিতে হবে নয় ভাগ করি।
এলাচ ইত্যাদি দিবে ঐ হিসাব ধরি।।
মুগ কলাই ইহাতে অবশ্যই দিবে।
দুগ্ধজাত মিষ্ট দ্রব্য সহিত সাজাবে।।
ঘটতলে যথাবিধি দিবে আলপনা।
পঞ্চগুঁড়ির আসন তাহে করিবে রচনা।।
এ আসনোপরে থুরে বাতাসা ও পান।
তদুপরি পূর্ণ ঘট করিবে স্থাপন।।
স্মরণে রাখিবে ফল দিবে নয় নয়।
ইহার অন্যথা যেন কভু নাহি হয়।।
পুষ্প দুর্ব্বা ধুপ দীপ জোগাড় করিয়া।
হরিদ্রোক্ত সূত্রে দুর্ব্বা রাখিবে বাঁধিয়া।।

পূজা অন্তে সই সূতা বাঁধিবে যে করে।
দক্ষিণান্ত করি পূর্ণ করিবে ব্রতেতে।।
প্রসাদ বিলাবে সবে না হয় অন্যথা।
অন্তত: ব্রাহ্মণ এক করাবে ভোজন।।
কর্মান্তে প্রসাদ নিজে করিবে গ্রহণ।
মতান্তরে পূজা বিধি করহ শ্রবণ।।
শনি বা মঙ্গলবার দিন সাধারণ।
বিপত্তারিণী পূজা কর অষ্টমীতে।।
প্রকৃষ্ট সময় এই যেন অন্যমতে।
ত্রয়োদশ ফল এতে সুনিশ্চিত দিবে।
শুভকর্ম অন্তে সার পুজন করিবে।।

বিপদে উদ্ধার লাগি কৌশল্য নন্দন।
দুর্গারে ডাকিল করি অকাল রোদন।।
সুরথ রাজার শোন অপূর্ব কথন।
বিপত্তারিণী পুজি পাবে রাজ্য ধন।।
কামনা যাহার সেবা সব পূর্ণ হবে।।
আদ্যঅন্ত শুনিয়া সবে শিবের বর্ণনা।
নারদের বাক্য শুনি হৃষ্ট কন্যাগণ।।
এই পূণ্য করা পাঠে পাপক্ষয় হয়।
বিপদনাশিনীর নামে দাও জয় জয়।।

শ্রীমন্তের কলমে কামিনী দর্শনঃ
সমুদ্রে শ্রীমন্ত চলে চিন্তি দুর্গানাম।
দিবানিশি তরী বহি চলে অবিরাম।।
কালিদহে দেখে এক দৃশ্য চমৎকার
কমল বনেতে হ’ল উদয় মাতার।।
গজ গিলে ও উগরে নিমেষের মাঝে।
শ্রীমন্ত বুঝিল বিপত্তারিণী বিরাজে।।
মাতৃ দরশনে তার বুকে এল জল।
মনের উৎসাহে ডাকে মা মা অবিরল।।
মগরার মোহনায় অতি ঝড় বৃষ্টি।
শ্রীমন্ত ভাবিল বুঝি উলটাইবে সৃষ্টি।।

মায়ের মহাত্ম্য কেবা বর্ণিবার পারে।
আপনি আসিল চণ্ডী তাকে রক্ষিবারে।।
অবশেষে তরী এল সিংহলের ঘাটে।
শ্রীমন্ত বারতা দিল রাজার নিকটে।।
পরিচয় জিজ্ঞাসিল সিংহল ভূপতি।
কি নাম তোমার হয় কোথায় বসতি।।
শ্রীমন্ত করিল তার উদ্দেশ্য বর্ণনা।
বাণিজ্যের তরে সিংহলেতে আগমন।।
কাল বনেতে পূর্বে যেরূপ দেখিল।
রাজার নিকটে তারা বর্ণনা করিল।।

শুনি রাজা বলে মোর লাগে চমৎকার।
যদি তা দেখতে পার পাবে পুরস্কার।
অর্দ্ধেক সাম্রাজ্য মোর সুনিশ্চিত দিব।
অত:পর তোমা আমি জামাতা করিব।।
রূপে গুণে মম কন্যা যেন দেবী সম।
তোমা করে দিব তারে এ প্রতিজ্ঞা মম।।
যদ্যপি তোমার বাক্য সত্য নাহি হয়।
জহলাদের করে তব মরণ নিশ্চয়।।
শ্রীমন্ত কহিল রাজা মিথ্যা না কহিব।
যাহা দেখিয়াছি আমি নিশ্চয় দেখাব।।

আনন্দিত হয়ে রাজা শ্রীমন্তেরে লয়ে।
উপনীত হইলেন কালীদহ জলে।।
কালীদহে রাজা কিছু না দেখিতে পেয়।
ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে জহলাদে ডাকয়ে।।
জহলাদেরে আজ্ঞা দিল শ্রীমন্তেরে বধিতে।
শ্রীমন্ত দুর্গারে স্মরে কাঁপিতে কাঁপিতে।।
বিপত্তারিণী নাম মনেতে জপিল।
একমনে করজোড়ে মায়েরে জপিল।
একমনে করজোড়ে মায়েরে ডাকিল।।
দুর্গারে স্মরণ করে চক্ষের জল বহে।
কেন মাগো দেখা দিলে নিজে কালিদহে।।

বিপত্তারিণী মাগো কেন গো নির্দয়।
দেখ মোরে আজি হল জীবন সংশয়।।
কোথা আছ দেখা দাও রক্ষ মোর প্রাণ।
তুমি বিনা কে করিবে সঙ্কটেতে ত্রাণ।।
তোমার করতে মাতা অর্পিল আমায়।
দয়াময়ী মাতৃনাম কলঙ্ক না হয়।।
শ্রীমন্ত আহবানে দেবী চঞ্চল হইল।
অষ্টাদশ ভুজা হয়ে মশাণে আসিল।।
শ্রীমন্তে কহিল ত্রাণ বিপদ নাশিনী।
ধন্য মাগো দয়াময়ী ভক্তের জননী।।
সার্থক করিলে নাম মশানেতে এসে।
শ্রীমন্ত গোষিল তাহা ফিরে নিজ দেশে।।

ধনপতি সওদাগরের কাহিনীঃ
ছিল এক সদাগর ধনপতি নাম।
দুই পত্মী তার অতি সুন্দরী সুঠাম।।
খুল্লনা নামেতে স্ত্রী ছিল মনোদু:খে।
সদাগর তাহারে না দেখে ভাল চোখে।।

স্বামী ভালবাসা হেতু খুল্পনার আশ।
বিপত্তারিণী পূজায় করিল প্রয়াস।।
খুল্লানার পূজা কথা সদাগর জানি।
বিচূর্ণ করিল ঘট আসিয়া আপনি।।

ভাঙ্গা ঘট লয়ে শিরে খুল্লানার ব্যাথা।
চক্ষের ধারায় বহি ফুটে কাতরতা।।
কর জোড়ে নতশিরে ডাকিল দুর্গারে।
বারে বারে কাঁদি বলে ক্ষমিতে স্বামীরে।।

এদিকেতে সদাগর যায় বাণিজ্যেতে।
প্রাণ সংশয় হ’ল পথে বিপদেতে।।
বিপত্তারিণী স্মরি খুল্লনার কাতরা।
পাঠাল শ্রীমন্ত পুত্রে উদ্ধারিতে ত্বরা।।

দেবর্ষি নারদ কর্তৃক দেবকণ্যাগনের নিকট বিপত্তারিণী ব্রতের প্রচারঃ
শঙ্করের কাছ হতে লভি নবজ্ঞান।
দেবর্ষি নদীতে যান করিবারে স্নান।।
মহামুনি আসে যখন যা যাবে নদীর নিকটে।
দেব কন্যাগণ বসে হেরে নদী তটে।।
ফুল দুর্বা বিল্বপত্র ভাসি আসে জলে।
ঋষিরে জিজ্ঞাসে তারা অতি কৌতুহলে।।
কুহ মুনি প্রকাশিয়া কারণ ইহার।
কেন বা ভাসিয়া আসে পূজা উপচার।।
কোন দিন স্নানকালে এমত না দেখি।
আমরা বসিয়া হেথা সর্ব্বদা নিরখি।।
নারদ কহিল কেন পূজিয়া তারিণী।
পূজা অন্তে ফুল দুর্বা ফেলে অনুমানি।।

কন্যাগণ দেবর্ষিকে করিয়া বেষ্টন।
শুনিতে ইচ্ছুক হন পূজার বিবরণ।।
পূর্বে কভু এই পূজা তারা শুনে নাই।
নারদে বেষ্টন তারা করিল যে তাই।।
তখন নারদ কহে কৈলাস বারতা।
কেমনে জানিতে পারে তারিণীর কথা।।
একথা নারদ যবে কৈলাসেতে ছিল।
পঞ্চদাসী গৌরি পাশে আসিয়া জুটিল।।
কি কারণে নাম তাঁর বিপত্তারিণী।
অভিলাষ হইয়াছে শুনিতে সে বাণী।।
মহাদেবপানে চাহি কহিলেন গৌরি।
শুনিতে তারিণী কথা ইচ্ছা যে পদ্মারি।।

বিপত্তারিণী কথা কহে পঞ্চানন।
পদ্মা তাহা যদি শুনেন তখন।।
সমুদ্র মন্থিল যবে সুর ও অসুর।
সহসা গরল তাহে উঠিল প্রচুর।।
কি হবে উপায় তার ভাবি দেবগণ।
শিবের সাহায্য মাগি লইল স্মরণ।।
দুর্গা নাম উচ্চারিয়া সেই বিষ পানে।
শিব হে তিলেক মাঝে শান্তি ফিরে আনে।।
দুর্গা নামে মহাদেব রক্ষিল ধরাতে।
বিপত্তারিণী সবে কহিল দুর্গারে।।
গোষ্ঠে যাত্রাকালে দেবী যশোদা জননী।
কৃষ্ণের মঙ্গল চাহে হয়ে কর প্রার্থী।।

কালিয়ার বিষর্পূ ছিল কালিদহ।
রাখালেরা তথা যায় শ্রীদাম সহ।।
না জানিয়া খায় কবে সে বিষজল।
বিষের ক্রিয়ার দেহ হইল বিকল।।
দুর্গা নামে তেজো দৃপ্ত শ্রীকৃষ্ণ আসিয়া।
রক্ষিল সবারে নিজে কালীরে নাশিয়া।।
যখন যে ভাবে যায় যে বিপদ আসে।
বিপত্তারিণী নামে সে সকলি নাশে।।
বিপদে সম্পদে কিংবা যে কোন সময়।
বিপত্তারিণী নাম রাখিও হৃদয়ে।।

বিপত্তারিণী মহিমা বর্ণনাঃ
দুর্গো দু:খহরা তারা বিপদনাশিনী।
দুর্গমে স্মরি মা তারা শক্তি সনাতনী।।
পরাংপরা পরমা প্রকৃতি পুরাতনী।
দুরারাধ্য ধ্যান সাধ্যা বিন্ধাগিরি নির্বাসিনী।।
মহিষমর্দিনী মহামায়া মহাদেবী।
শিবা নিতম্বিনী শ্যামা সর্বানী শঙ্করী।।
গুণময়ী গুণাতীতা সারদা সুন্দরী।
ভ্রমরী ভবানী ভীমা ধুম ক্ষেমাঙ্করী।।
কালী কালহরা কালাকালে কর পার।
কুলকুণ্ডলিনী কর বিপদে নিস্তার।।

লম্বোদরী বাঘাম্বরা কলুষ নাশিনী।
কৃতান্ত দলনী কাল হর বিলাসিনী।।
স্বামী পুত্রপরিজন দীর্ঘজীবি হয়।
সদায় আনন্দে সে থাকিবে নিশ্চয়।।
নতশিরে মহামুণি জিজ্ঞাসে আবার।
পৃথিবীতে এই ব্রত করিতে প্রচার।।
ভক্তবাঞ্ছা পূর্ণ তবে আশুতোষ কহে।
যে ব্রত ভেজোরাশি সর্বপাপ দহে।।
বিদর্ভ দেশেতে ছিল এক নরপতি।
গুণবতী নামে পত্নী সাধ্বী ছিল অতি।।
দয়ামায়া সেবাগুণে সকলের প্রিয়।
প্রীতিবেশ পুরজনে করি রমণীয়।।

বিধির নিব্বন্ধ নারী খণ্ডাইতে নরে।
চর্ম্মকার-পত্নীকে ডাকাল চুপি সারে।।
তার সাথে হৃদতা স্থাপিলা যে নারী।
কহিল নিষিদ্ধ মাংস দেখাইতে আনি।।
চর্ম্মকার পত্নী তাঁরে করজোড়ে কহে।
এ খবর রাজ কর্ণে কোনমতে গেলে।
শাস্তির বিষম ফল পাবো শেষকালে।।
রাণী তারে নানা দ্রব্য দিলো ভারে ভার।
রাণীর কাকুতি দেখি মন টলে তার।।
গুণবতী দিল তারে চরম আশ্বাস।
একান্ত গোপনে থুবা আনিয়া যে মাংস।।

মহাভয়ে চামারিণী অতি সঙ্গোপনে।
বস্ত্রমধ্যে বাঁধি মাংস কোনরূপে আনি।
মহারাণী মাংস লয়ে গৃহেতে আপন।
সভয়ে আচ্ছাদি রাখে একান্ত গোপন।।
ভৃত্যের নয়নে এই মাংসটি পড়িল।
রাজ কর্ণে এ সংবাদ সে-ই নিবেদিল।।
রাজা শুনি রাণী পাশে ত্বরা ছুটে আসে।
রূঢ়ভাবে মাংস কথা রাণীরে জিজ্ঞাসে।।
এ কথা সঠিক হলে জেনো তুমি রাণী।
তোমাকে করাব আমি যমের ঘরণী।।
ধর্ম কার্য্যে তুমি মোর হও অংশীদার।
তোমার কুকর্ম্ম এই অসহ্য আমার।।

প্রাণভয়ে মিথ্যা কভু বলনা নিশ্চিত।
ধর্ম্মপানে চাহিয়ে সত্য যথোচিত।
রাণী কহে ফল মূল পূজা উপাচার।।
পূর্ণ করি রাখিয়াছে গৃহেতে আমার।
গৃহের সকল দ্রব্য দেখাব তোমায়।।
পূজার সময়টুকু দাওগো আমায়।
এই বলি রাণী করে দুর্গা আরাধনা।।
বিপদনাশিনী মাগো সদয় হওনা।
দুর্গা শিব ক্ষমা ধাত্রী দুর্গতি নাশিনী।।
এ ঘোর সঙ্কটে মোরে বক্ষ নারায়ণী।
অভয়া বরদা তুমি মাগো মহামায়া।।

দয়া করি দাও মাগো তব পদ ছায়া।
মোর দেহে যতদিন রহিবে পরান।।
তব ব্রত মমগৃহে রহিবে আপ্রাণ।
দানব দলনী মাগো হও তুমি প্রীত।
এত কহি রাণী তথা হইলা মূচ্ছিতা।।
ভক্তি হেরি মহামায়া আসে রাণী পাশে।
তাহারে নির্ভয় তিনি দেন মৃদুভাসে।।
আমার ভজনা যেবা করে একমনে।
কেশাগ্র স্পর্শিতে তার পারে না শমনে।।
তোমার ভক্তিতে আমি অতিশয় খুশি।
দেখগে মাংসের স্থলে ফল রাশি রাশি।।
রাজারে ডাকিয়া আনি দাওগো প্রসাদ।
সঙ্গে সঙ্গে দূর হবে সব পরমাদ।।

এত বলি দুর্গা দেবী গেল নিজ ধামে।
ধুলি হতে উঠি রাণী উদ্দেশ্যে প্রণামে।।
তখনি আনিল রাণী ডাকায়ে রাজারে।
গৃহমধ্যে কিবা আছে দেখবার তরে।।
রাজা দেখে গৃহ পূর্ণ পূজা উপাচারে।
সবিনয়ে রাজা কহে ক্ষমহ আমারে।।
রাণীর নিকটে রাজা প্রসাদ খাইল।
হরষিত চিত্তে রাজা কর্ম্মে মন দিল।।
বিপত্তারিণী ব্রত আচরণ করি।
দেহ অন্তে স্বর্গে গেল দিব্য কান্তি ধরি।।
শুক্লপক্ষ আষাঢ়ের তৃতীয়া হইতে।
ব্রতের সময় তুমি শুন মন মতে।।

শনি বা মঙ্গলবার নবমীর মাঝে।
উপযুক্ত হবে যেন এ ব্রতের কাজে।।
পূর্ব্বদিনে নিরামিষ করিবে আহার।
সাধ্যমত ফল ফুল করিবে যোগাড়।।
ব্রত দিনে প্রাত:কালে স্নান সমাপিয়া।
সংকল্প করিবে ঘট স্থাপন করিয়া।
আম্র-শাখা আর ডাব দিবে ঘটোপরে।
ফল-মূল মিষ্টি দিয়ে সাজাবে নৈবদ্যেরে।।
আপনার প্রিয়দ্রব্য সাজাবে যতনে।
ত্রয়োদশ করি ফল দিবে গুণে গুণে।
নৈবেদ্যের সাথে দিবে তাম্বুল ও জল।
ব্রাহ্মণে করিবে দান হইবে সফল।।

ব্রতশেষে দক্ষিণা অবশ্যই দিবে।
ইহা বিনা শুভকর্ম বিফল হইবে।।
তেরটি গাঁইট দিয়ে রক্তবর্ণ সূতা।
সকলে বাঁধিবে হস্তে না হয় অন্যথা।।
ভক্তিভরে এই ব্রত পালন করিলে।
স্বর্গের বিশ্রাম সুখ ধরাতেই মিলে।।
বিপত্তারিণী ব্রত করিলে পালন।
প্রিয়চক্ষে দেখিবে যে আত্মীয় স্বজন।।
পুত্রের ভক্তি আর স্বামীর সোহাগে।
আনন্দে কাটিবে দিন নব অনুরাগে।।
দু:খ দৈন্য দূরে যাবে তরিবে বিপদ।
আয়ুহীন আয়ুলাভ পাইয়া সম্পদ।।

বিপদ নাশিনীর পাঁচালীঃ
বিপত্তারিণীর কথা করিব বর্ণনা।
যে কথা শুনিলে হয় বিপদ খণ্ডন।।
হরিনামে মত্ত হয়ে সে নারদ ঋষি।
অকস্মাৎ উপনীত কৈলাশেতে আসি।।
মহাসুখে তথা বসি রহে হর-গৌরী।।
নারদ নোয়াল শিব চরণে দোহারি।।
মহাদেব স্মিতহাস্যে কহিলেন একি।
অসময়ে মুনিবরে কৈলাসেতে দেখি।।
করপুটে মহামুনি কহিলেন প্রভু।
জ্ঞান আহরণ হেতু আসি হেথা কভু।।

কোন ব্রত আচরিলে নারী থাকে সুখে।
সঙ্কট মাঝেতে তার থাকে বল বুকে।
মনস্কাম সিদ্ধ হেতু থাকে নাহি দু:খ।
বিপদে তরিয়ে যাবে পাবে মহাসুখ।।
নারীর বেদন হেরী আমি বিচলিত।
তাদের শান্তির পথ করুন নির্ণিত।।
শিব কহে হে রারদ ভাল জিজ্ঞাসিলে।
বিপত্তারিণী ব্রতে এই ফল মিলে।।
বিপত্তারিণী ব্রত পালে যেই নারী।
সর্ব দু:খ নাশ নিমিষেতে তারি।।

নমো নম: গজানন বিঘ্নবিনাশন।
নমো প্রভু মহাকায় মহেশ নন্দন।।
নমো নমো লম্বোদর নমো গণপতি।
মাতা যার আদ্যা শক্তি দেবী ভগবতী।।
সর্ব দেব গণনায় অগ্রে যার স্থান।
বিধি বিষ্ণু শিব যিনি সর্বাধিক মান।
ওরাঙ্গা চরণে প্রভু ভক্তের প্রণাম।
সর্বসিদ্ধিদাতা পূর্ণ কর মনস্কাম।।

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.