বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সূর্যগ্রহণের যেরূপ প্রভেদ!

 

সূর্যগ্রহণ

                                                            ভারতীয় সময় ১৭ ই অগ্রায়ন, বাংলাদেশ সময় ১৯ ই অগ্রায়ন, ইংরেজী ৪ ডিসেম্বর শনিবার এই গ্রহণ পরিলিক্ষিত হবে।

সারা পৃথিবীর মানুষ আজ করোনা মহামারী ভাইরাসের কারনে অনেকটাই অস্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। লকডাউনের কারনে অনেকটা গৃহবন্দী সময় পার করছিল মানব জাতি। তবে প্রকৃ্তি যে তার আপনরুপ ফিরে পেয়েছে তা নিয়ে কারো কোন সন্দেহ আছে বলে মনে হয় না।

বছরের পর বছরের এই প্রকৃ্তির উপরে চালিয়ে যাওয়া অত্যাচার বোধহয় ঠিক এভাবেই ফিরিয়ে দিচ্ছে প্রকৃ্তি তার নিজের হাতে। ঠিক তেমনি এই মহাজগৎ এর প্রত্যেকটা গ্রহ নক্ষত্র ও তার আপন মনে তার কাজ ঠিক ই করে চলছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে আমাদের এই মহাবিশ্বে।

তবে পৃথিবীতে কি ঘটছে বা না ঘটছে সেই দিকে ভ্রূক্ষেপ করার কোন প্রয়োজন নেই মহাশূন্যের বাসিন্দা তথা গ্রহ , নক্ষত্র, নীহারিকা, ছায়াপথ, উল্কাপিণ্ড বা গ্যালাক্সি ইত্যাদি কারোর ই। কালের বিবর্তনে তারা চলছে তাদের আপন গতিতে।

পূর্ণগ্রহণ

ঠিক সেই নিয়মেই  এবার ঘটতে চলছে সূর্যগ্রহণ।  ৪ ডিসেম্বর ২০২১ দেখা যাবে এই সূর্যগ্রহণ।

এই গ্রহণ নিয়ে অনেক মিথ প্রচলিত রয়েছে বিভিন্ন ধর্মে। তবে আপাতত সেই দিকে না গিয়ে আমরা বরং বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তে যাই। চাঁদ যখন ঘূর্ণায়মান অবস্থায় পৃথিবী এবং সূ্র্যের মাঝখানে চলে আসে তখন চাঁদের ছায়া সূ্র্যের উপরে পরে। যার ফলে সূর্যকে আমরা কিছুক্ষনের জন্য দেখতে পাই না। আর একেই বলা হয়ে থাকে সূ্র্যগ্রহণ।

সূর্যগ্রহণ সাধারাণত দুই প্রকার। পূর্ণগ্রাস এবং বলয়গ্রাস।

বলয় ও পূর্ণগ্রাস

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ কি ?

সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদের ছায়া যদি সম্পূর্ন সূর্যকে ঢেকে ফেলে তাহলে তখন তাকে আমরা পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ বলে থাকি। এই সময়ে সৌরমুকুট এর মত মহাজাগতিক বিরল ঘটনা দেখা যায় কেননা চাঁদ এই সমইয়ে সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলে।

বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ কি ?

বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ সাধারনত চাঁদের কৌনিক ব্যাসের কারনে ঘটে। গ্রহণের সময় চাঁদের কৌনিক ব্যাস যদি আকারে ছোট হয়ে থাকে সূর্যের চেয়ে তখন তাকে বলা হয় বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ।

সূর্যগ্রহণ সাধারণত অমাবস্যার পরে যখন নতুন চাঁদ উঠে ঠিক তখন সংঘটিত হয়। বছরে সাধারনত সর্বোচ্চ পাঁচ টি গ্রহণ ঘটে থাকে। এর মধ্যে যেকোন দুটি সূর্যগ্রহণ পূর্ণগ্রাস ।

সর্বশেষ সূর্যগ্রহণ হয়েছিলো ১০ই জুন ২০২১ এ।

রিং অফ ফায়ার

রিং অব ফায়ার

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদের ছায়া সূর্যের উপর ঠিক এমন ভাবে পরে যেন সূর্যকে একটা রিং এর মত লাগে। মানে চাঁদের ছাঁয়াতে সূর্যের মাঝখানের অংশ ঢাকা পরলেও এর একদম সীমানার আলোর রেখা দেখা যায়। যা অনেকটা হাতে পরবার আংটির মত দেখতে লাগে। আর একেই আমরা রিং অব ফায়ার বলে থাকি।

এবার জেনে নেয়া যাক এই গ্রহণ কখন , কোথায় দেখা যাবে।

 

ভারতঃ

ভারতীয় সময় ১৭ ই অগ্রায়ন, বাংলাদেশ সময় ১৯ ই অগ্রায়ন, ইংরেজী ৪ ডিসেম্বর এই গ্রহণ পরিলিক্ষিত হবে।

গ্রহণ স্পর্শ (আরম্ভ) – ১০ টা ৫৯ মিনিট

পূর্নগ্রাস আরম্ভ – ১ টা ০ মিনিট

গ্রহণ মধ্য – ১ টা ০৪ মিনিট

পূর্ণগ্রাস সমাপ্ত – ১ টা ৩৪ মিনিট

গ্রহণ মোক্ষ (সমাপ্তি) – ৩ টা ০৭ মিনিট

পূর্ণগ্রাসের সর্বোচ্চ স্থিতি – ১ মি ৫৭ সেকেন্ড

গ্রহণ স্থিতি – ৪ ঘণ্টা ৭ মিনিট

গ্রাসমান – ১.০৩৬

 

বাংলাদেশঃ

ভারতীয় সময় ১৭ ই অগ্রায়ন, বাংলাদেশ সময় ১৯ ই অগ্রায়ন, ইংরেজী ৪ ডিসেম্বর এই গ্রহণ পরিলিক্ষিত হবে।

গ্রহণ স্পর্শ (আরম্ভ) – ১১ টা ২৯ মিনিট

পূর্নগ্রাস আরম্ভ – ১ টা ৩০ মিনিট

গ্রহণ মধ্য – ১ টা ৩৪ মিনিট

পূর্ণগ্রাস সমাপ্ত – ২ টা ৪ মিনিট

গ্রহণ মোক্ষ (সমাপ্তি) – ৩ টা ৩৭ মিনিট

পূর্ণগ্রাসের সর্বোচ্চ স্থিতি – ১ মি ৫৭ সেকেন্ড

গ্রহণ স্থিতি – ৪ ঘণ্টা ৭ মিনিট

গ্রাসমান – ১.০৩৬

সকলের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা কেউ খালি চোখে সূ্র্যগ্রহণ দেখবেন না। এটি চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

গ্রহণের দৃশ্যঃ 

এই গ্রহণ অ্যান্টার্কটিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিনাংশে, আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ ভাগে এবং ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ ভাগ্যে দৃশ্য হবে।

তবে এই গ্রহণ বাংলাদেশ ও ভারতে অদৃশ্য বলে পাকপাত্র পরিত্যাগে বিধি নিষেধ নাই।

ছবি – ইন্টারনেট

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.