মা দূর্গার আগমন ও গমন কিসে? কি কি প্রভাব পড়বে জেনে নিন
মাঝে মাত্র আর কয়েকদিন। তার পরই দুর্গাপুজো। ঢাকে কাঠি পড়ল বলে। স্বাভাবিক ভাবেই এখন পুজোর তোরজোড় চরমে।দুর্গা পূজার আগে প্রতি বছরই বাঙালির একটা প্রশ্ন থাকে। এবছর মা আসছেন কোন বাহনে? যাচ্ছেনই বা কোন বাহনে চেপে। দেবী দুর্গার আগমন ও গমন কোন বাহনে হচ্ছে, পঞ্জিকা মতে তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করে কেমন কাটবে আগামীর দিনগুলি।নিঁখুত গণনার উপর ভিত্তি করে দেবী দুর্গার আগমন ও গমনের বাহন নির্ধারণ করা হয়। কোনও কোনও বাহনে এলে বা গমন করলে তাকে শুভ মনে করা হয়, আবার কোনও কোনও বাহনের ক্ষেত্রে তা অশুভ প্রভাব বিস্তার করে যায়।
সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা সাধারণত গজ, ঘোটক, নৌকা এবং দোলা এই চার প্রকার বাহনেই আগমন এবং গমন করেন। দেবীর আগমন এবং গমন নির্ভরশীল প্রকৃতির উপর বা অন্য ভাবে বলা যায় আগমন বা গমনের উপর প্রকৃতির পরিবর্তন নির্ভর করে।
কোন বাহনের কী তাৎপর্য–
দোলা– দোলা অর্থাৎ পালকিতে আগমন বা গমনের ফল– দোলায়াং মকরং ভবেৎ – অর্থাৎ মহামারি বা মরকতুল্য বিষয়ে ভোগার আশঙ্কা।
ঘোটক অর্থাৎ ঘোড়া। ঘোড়ায় আগমন বা গমনের ফল– ছত্রভংস্তুরঙ্গমে অর্থাৎ ছত্রভঙ্গ, ধ্বংস বা ছন্নছাড়া বা ধ্বংসাত্মক লীলার আশঙ্কা।
নৌকা – নৌকায় আসার অর্থ বন্যা বা জলমগ্ন সম্পর্কিত বিষয়। তবে নৌকায় আগমন বা গমনের ফলস্বরূপ এ–ও বোঝানো হয় শষ্যপূর্ণ বসুন্ধরা। কারণ বন্যা বা জলমগ্ন হলে পলিপূর্ণ ভূমিতে ফসলের ফলন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।
গজ অর্থাৎ হস্তী বা হাতি। হস্তী বা হাতি দ্বারা সমৃদ্ধি বা শুভ নির্দেশ করে। ফল– গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা।
কোন বারে কোন বাহন–
সপ্তমী ও দশমী তিথি সোমবার বা মঙ্গলবার হলে দেবী দুর্গার আগমন বা গমন হয় গজে।মঙ্গলবার বা শনিবার ঘটকে আগমন বা গমন হয়।বুধবার দেবী দুর্গার আগমন ও গমন হয় নৌকায়।আবার বৃহস্পতি বা শুক্রবার দোলায় আগমন বা গমন হয়।
এবার কোন বাহনে আসছেন–
পঞ্জিকা বলছে, মা দুর্গা কী ভাবে আসবেন তা ইঙ্গিত দেয় আগামী দিনগুলি শস্যশ্যামলা থাকবে নাকি জরা সমস্যা এগুলি লেগেই থাকবে। ২০২২–এ অক্টোবর মাসে পুজো। পঞ্জিকা অনুযায়ী, দেবী দুর্গা এবার আসছেন গজে অর্থাৎ হাতিতে। এবছর দেবী দুর্গার আগমন শুভ। কারণ গজকে দেবীর উৎকৃষ্টতম বাহন বলে মনে করা হয়। গজে দেবী আগমন কিংবা গমন অত্যন্ত শুভ।
সপ্তমী বা দশমী বুধবার হলে দেবীর আসা বা যাওয়া নৌকায়। ফল “শস্য বুদ্ধিস্তথাজলম” অর্থাৎ প্রবল বন্যা ও খরা দেখা যায়। নৌকায় মনোকামনা পূর্ণ হওয়া সূচিত হয়। ধরিত্রী হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা যায়। এখন শুরু মহামায়ার কাছে প্রার্থনা করা এবং সাবধান থাকা, তিনি যেন ফের শুভ দিন নিয়ে আসতে পারে বিশ্ববাসীর। সেরে উঠুক পৃথিবী। ভাল থাকুক এইপৃথিবীর সকল প্রাণী সকল সৃষ্টি।
আবার শাস্ত্রমতে এ–ও বলা হয় যে, কোনও বছর যদি দেবী দুর্গার আগমন ও গমনের বাহন একই থাকে, তা হলেও তা অশুভ প্রভাব বিস্তার করে।
তথ্যসূত্রঃ আনন্দবাজার