যে কারণে ধনতেরাসের দিন যম দ্বীপ ধরানো হয়!

পুরাকালে এই দেশে হিমা বলে এক রাজা বসবাস করত। সেই রাজার ছিল এক সুন্দর রাজপুত্র। কিন্তু রাজপুত্রের উপর ছিল এক অভিশাপ। সেই অভিশাপে রাজপুত্রের বিয়ের চতুর্থ দিনেই রাজপুত্র মারা যাবেন বলে উল্লেখ করা হয় জন্ম পত্রিকাতে।

আর এই কথা ভেবে রাজা রাজপুত্রের বিবাহ করাতে ইচ্ছুক ছিলেন না। কিন্তু একবার রাজপুত্রের সাথে এক রাজকন্যার সাক্ষাৎ হয়, এবং দুইজনের মধ্যে প্রেম হয়। পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু বিবাহের পর নববধূ তার শ্বশুর মশাইয়ের কাছে থেকে জানতে পারে তার স্বামীর উপর যে অভিশাপ আছে তার কথা।

তখন অত্যন্ত বুদ্ধিমানী রাজবধূ বিবাহের চতুর্থ দিনে প্রথমেই গণেশের পূজা অর্চনা শুরু করেন এবং পরবর্তী সময়ে মা লক্ষীর পূজা করেন। তখন এই দুই দেবতা এবং দেবী তার পুজায় খুশি হয়ে তার কাছে আবির্ভুত হন।

তখন রাজবধূ তাদের কাছে তার ধন অর্থাৎ স্বামীর মঙ্গল কামনা করেন এবং তার স্বামীর অকাল মৃত্যু রোধ করতে অনুরোধ করেন। তখন তারা বলেন তুমি যদি তোমার বুদ্ধির সাহায্যে ভগবান যমকে তোমার গৃহে প্রবেশ করতে না দাও তাহলেই রাজপুত্রের প্রাণ রক্ষা পাবে এবং তার দীর্ঘায়ু হবে।

এছাড়াও মা লক্ষী তাকে জানিয়ে দেন ভগবান যম তার রাজপ্রাসাদ সর্পবেশে আসবেন। এই বলে দেবী লক্ষী অদৃশ্য হয়ে যান। তখন বুদ্ধিমানী রাজবধূ রাজকোষ থেকে সকল মূল্যবান অলঙ্কার ধাতু যেমন সোনা, রুপা, হীরা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন এবং তা রাজ প্রাসাদের যে কক্ষে রাজকুমার আছে তার চারপাশে ছড়িয়ে দেন তারপর চারপাশে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেন।

ভয়ে তার নববিবাহিত স্ত্রী তাকে সারাদিন ঘুমাতে দেননি। তার স্ত্রী সারাক্ষণ গান গাইতে থাকলে। যাতে তার স্বামী না ঘুমিয়ে পড়ে। যখন সর্পবেশী যমরাজ রাজকুমারের খোঁজে রাজপ্রাসাদে আসেন তখন তিনি প্রদীপের আলোয় এবং অলঙ্কারের চমকে এবং উজ্জ্বলতায় তার চোখ ধাঁধিয়ে যায়।

ফলে দিকভ্রষ্ট হয়ে সর্পবেশী যমরাজ রাজপ্রাসাদের পথ হারিয়ে ফেলেন এবং সেইভাবে রাতভর রাজপ্রাসাদ খুঁজে পান নি। তখন সাপ রূপ ধারী যম ওই ডালিতে সাজানো অলঙ্কারের উপর বিরাজমান হন এবং বিবাহিতার এই অভ্যর্থনা পেযে সন্তুষ্ট হয়ে রাজকুমার কে জীবনদান দেন।

ফলে একপ্রকার ব্যর্থ হয়ে যমলোকে ফিরে যান। আর এই দিনটি ছিল কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীর দিন। তাই এই দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে হিন্দুদের মধ্যে উৎসব আকারে পালন করা হয়।

যা বর্তমানে ধনতেরাস নামে পরিচিত। এই জন্য আমাদের দীর্ঘায়ু ও যমরাজ কে সন্তুষ্টির জন্য ধনতেরসের দিন যম দীপ জ্বালানোর ও রেওয়াজ রয়েছে ।

সোর্সঃ ছবি ও তথ্য ইন্টারনেট হতে সংগৃহিত

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.