শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশেই পালিত হয়েছিল দীপাবলি

বরাহরূপী বিষ্ণুর ঔরসে ধরিত্রীর গর্ভে জন্ম হয় নরকাসুরের। কালক্রমে নরকাসুর তার পিতার কাছ থেকে লাভ করে প্রাগজ্যোতিষপুর অর্থাৎ কামরূপ রাজ্য। দেবী কামাখ্যাকে তুষ্ট করে তাঁর কৃপায় অসুররাজ নরক হয়ে ওঠে মহাপরাক্রমশালী। এমনকী, স্বয়ং দেবতাদেরও ত্রাস হয়ে ওঠে সে। স্বর্গ-মর্ত্য-পাতালে তার দাপটে ত্রাহি ত্রাহি রব ওঠে। দেব দানব গন্ধর্ব নির্বিশেষে ষোল হাজার সুন্দরী রমণীদের বলপূর্বক হরণ করে এক পাহাড়ে নির্মিত বন্দিশালায় সে আটকে রাখে। শুধু তাই নয়, উদ্ধত নরক দেবরাজ ইন্দ্রকে পরাজিত করে দেবমাতা অদিতির কর্ণভূষণ লুন্ঠন করে।

এই সময়ে দ্বারকাধীশ শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুরের নারকীয় কুকীর্তির কথা শুনে যুদ্ধাভিযান করেন প্রাগজ্যোতিষপুরের দিকে। যুদ্ধে সুদর্শন চক্রে নরকের মস্তক ছিন্ন করে শ্রীকৃষ্ণ ষোল হাজার বন্দিনীকে মুক্ত করেন। নরকাসুরের দানবীয় অত্যাচার ও নারী নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তিলাভ করে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে গৃহ সাজিয়ে ছিল আলোকমালায়। প্রাগজ্যোতিষপুর থেকে দ্বারকা— পূর্ব পশ্চিমে প্রায় দু হাজার মাইল বিস্তৃত ভারত আত্মপ্রকাশ করেছিল দ্বীপান্বিতা রূপে। বলতে গেলে দীপাবলি উৎসবের সেই শুরু।

এছাড়াও পুরাণ মতে অনেকেই মনে করেন আজকের দিনে দেবী লক্ষ্মী পালন কর্তা বিষ্ণুর সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিল।তাই অনেক হিন্দু বাড়িতে দীপাবলির দিনে বাড়িতে লক্ষ্মী নারায়ণের পূজাও হয়ে থাকে।অন্য মতে এই দিন মা লক্ষ্মী জন্মগ্রহণ করেন।আর তাই বাড়িতে মা লক্ষীর শুভ আগমনের জন্য এই দিন মা লক্ষীর পূজা করা হয়। কোথাও কোথাও দীপাবলির দিন হয় লক্ষ্মী ও অলক্ষ্মী পুজো। অলক্ষ্মীকে বিদায় জানিয়ে লক্ষ্মীকে সমারোহে ঘরে স্থাপন করা হয়, তাই প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁকে বরণ করা হয় ঘরে ঘরে। পূর্বদিন ভূত চতুর্দশী থেকে এর সূচনা হয়। অশুভ শক্তি যাতে বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, তাই প্রদীপ জ্বালিয়ে সব আলো করা হয়। অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার দিন দীপাবলী। জৈন তীর্থঙ্কর মহাবীর এদিন পরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। বিক্রমাব্দ অনুসারে দীপাবলি থেকে নতুন বছর আরম্ভ হয়।

সোর্সঃ সংগৃহিত

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.