মা, বিপত্তারিণী মাতা দেবী দূর্গার ই একটি অংশ। দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপ রয়েছে। বিপদে-আপদে, সংকট মোচনে ভক্তদের রক্ষা করতে মা দূর্গা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রূপে আবির্ভূত হন এবং ভক্তদের রক্ষা করে থাকেন। স্বর্গের দেব-দেবীদের ও তিনি রক্ষা করে থাকেন। তার মধ্যে বিপত্তারিণী অন্যতম।
হিন্দুধর্মাবলম্বীরা মূলত বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই দেবীর পুজো করেন। সংসারের সকল বিপদ দূর করতে হিন্দু মহিলারা উপবাস রেখে এই ব্রত পালন করে থাকেন।
দেবী দুর্গা ১০৮ অবতারের অন্যতম এবং দেবী সঙ্কটনাশিনীর একটি রূপ মা বিপত্তারিণী। হিন্দু ধর্মে বিপত্তারিণী ব্রতের গুরুত্ব অসীম। আষাঢ় মাসের রথযাত্রা থেকে শুরু করে উল্টো রথের সময় পর্যন্ত যে শনিবার ও মঙ্গলবার পড়ে, সেই দিনগুলিতেই বিপত্তারিণীর ব্রত পালন করা হয়। বিশ্বাস অনুযায়ী, ভক্তি ভরে মন প্রাণ দিয়ে এই পুজো করলে যে কোনও বিপদ থেকে মুক্তি ও রক্ষা পাওয়ার উপায় মেলে।
বিপত্তারিণী পুজো ২০২৩
এই বছর ২৪ জুন, শনিবার এবং ২৭ জুন, মঙ্গলবার পড়েছে বিপত্তারিণীর ব্রতর দিন।
হিন্দুধর্মাবলম্বীরা মূলত বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পূজো করেন। সংসারের সব বিপদ-আপদ দূর করতে হিন্দু মহিলারা এই ব্রত পালন করে থাকেন। এই পূজোর একটা বিশেষ নিয়ম হল সকল নৈবেদ্য ১৩ টা করে দেবীকে উৎসর্গ তা নিবেদন করতে হয়।
ব্রত পালনের উপকরণ :
ঘট, আম্র পল্লব, শীষ সহ ডাব, একটি নৈবেদ্য,১৩ গাছি লাল সুতো, ১৩ টি দূর্বা, ১৩ টি পান ও ১৩ টি সুপুরি, ১৩ টি গিঁট দেওয়া লাল সুতো (সঙ্গে ১৩ টি দূর্বা বাঁধা), ১৩ রকম ফুল, ১৩ রকম ফল।
বিপত্তারিণী পুজোর নিয়ম:
১. ব্রতের আগের দিন নিরামিষ আহার করে সংযত করতে হয়।
২. উপবাস করে নিষ্ঠা ভরে সব উপকরণ দিয়ে মা বিপত্তারিণীর পুজো করতে হয়।
৩. পুজো শেষে ১৩ টা লুচি ও ১৩ রকমের ফল খেতে হয় প্রসাদ হিসাবে।
৪. পুজোয় পায়েশ ভোগ দিতে হয় নিরামিষ খিচুড়ি রান্না করে নিবেদন করতে হয়।
৫. মায়ের জন্য লাল শাড়ি, শাখা, সিঁদুর, চাল, কাঁচা সবজি, ফল প্রসাদ, তেলের পঞ্চ প্রদীপ নিবেদন করতে হয়।
৬. পুজো হয়ে গেলে ঠাকুরের পায়ে অর্পণ করা ১৩ টি গিঁট দেওয়া লাল সুতো ছেলেদের ডান হাতে, মেয়েদের বাম হাতে মন্ত্র উচ্চারণ করে বেঁধে নিতে হয়।
৭. এই লাল সুতো অন্তত তিনদিন হাতেই রাখার নিয়ম আছে। এছাড়াও ব্রাহ্মণদের দক্ষিণা নৈবদ্য প্রদান করতে হয়।
বিপত্তারিণীর মন্ত্র:
মাসি পূণ্যতমেবিপ্রমাধবে মাধবপ্রিয়ে।ন বম্যাং শুক্লপক্ষে চবাসরে মঙ্গল শুভে। সর্পঋক্ষে চ মধ্যাহ্নেজানকী জনকালয়ে। আবির্ভূতা স্বয়ং দেবীযোগেষু শোভনেষুচ। নমঃ সর্ব মঙ্গল্যেশিবে সর্বার্থসাধিকে শরণ্যে ত্রম্বক্যে গৌরী নারায়ণী নমস্তুতে।।