সংসারে সুখ ফিরিয়ে আনতে বৃহস্পতিবার লক্ষীবারে কী কী নিয়ম পালন করা উচিত? চলুন জেনে নেই!

 

বৃহস্পতিবার “মা লক্ষীবার”। এই দিনে সকল গৃহের গৃহিণীরা বা মায়েরা “মা লক্ষ্মীর” পূজা করে থাকেন। তিনি ধন সম্পদ ও ঐশ্বর্যের দেবী। বৃহস্পতিবার মা লক্ষ্মীর পূজা ও আরাধনা করলে সংসারে কোনদিন ধনসম্পদ ও অর্থের অভাব হয় না। হিন্দু মহিলারা এই দিনে উপবাস রেখে সংসারের মঙ্গল কামনায় ও ধনসম্পদ বৃদ্ধির আশায় মা লক্ষ্মী বা অন্নপূর্ণা দেবীর পূজা করে থাকেন। “অন্নপূর্ণা দেবী” “মা লক্ষ্মীর” আরেক নাম যিনি আমাদের অন্ন দান করে থাকেন। পূজায় মা লক্ষ্মী প্রসন্ন হলে তাদের ধন-সম্পদ উপচে পড়ে। তাদের আর কোন কিছুর অভাব হয় না। সংসারে সুখ-শান্তি ও আনন্দ বিদ্যমান থাকে। “মা লক্ষ্মী” বড় চঞ্চলা, তাই লক্ষ্মী দেবীকে প্রসন্ন করতে সংসারে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয় তা না হলে গৃহ থেকে মা লক্ষ্মী বিদায় হোন।

বেশিরভাগ হিন্দু ঘরে প্রত্যেক বৃহস্পতিবার শ্রদ্ধা ও ভক্তি সহকারে “মা লক্ষ্মীর” পূজা করা হয়। শরৎকালে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন পবিত্র ও শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে দেবীর উপাসনা বা আরাধনা করলে অর্থ প্রাপ্তি হতে পারে । বৃহস্পতিবার হলো লক্ষ্মীর দেবীর চিহ্ন বা প্রতীক। গ্রহের দিক থেকে বৃহস্পতি শুভ।

সঠিক নিয়মে যদি “মা লক্ষ্মীর” পূজা করা হয়, তা হলে দেবীর কৃপা দৃষ্টি খুব সহজেই লাভ করা যায়। তাঁর উপাসনায় যদি তিনি প্রসন্ন হোন, তা হলে সংসার ধন-সম্পত্তিতে পরিপূর্ণ হয়। মহালক্ষ্মীর পূজাপাঠে ধন, মান, যশের সাথে সাথে শারীরিক সুস্থতাও লাভ হয়। বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর উপাসনা ও পূজা করলে সকল দুঃখ-দুর্দশা দূর হয়। অর্থবিষয়ক সমস্যারও সমাধান হয়। যদি কোনও বৃহস্পতিবার পূর্ণিমা হয়, তবে সেই দিন কোনও গৃহিণী বা মা উপবাসে রেখে লক্ষ্মীমাতার পুজো করলে ধন-সম্পদে ঘর পরিপূর্ণ হয়। শরৎকালে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন দেবী জাগ্রত থাকেন। সে দিনে মায়ের পূজা, মহিমাকীর্তন ও দ্বাদশ নাম পাঠ করলে দেবীর আশীর্বাদ প্রাপ্তি হয়।

শরৎকালে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজা হয়ে থাকে। পবিত্র ও শুদ্ধ বস্ত্রে মায়ের উপাসনা বা আরাধনা করলে লটারিতে অর্থ প্রাপ্তিও হতে পারে, ব্যবসায় অগ্রগতি আসে। আরো আসে সুখ ও সমৃদ্ধি, শরীর স্বাস্থ্য থাকে উত্তম। বৃহস্পতির অগ্রগতির জন্য হলুদ পোখরাজ, হলুদ সুতো হাতে পরিধান করা হয়। কথায় বলে, লক্ষ্মী বড় চঞ্চলা প্রকৃতির, তাই তাঁকে নিজের বাড়িতে অচলা ভাবে স্থায়ী করতে এই জিনিসগুলি নিবেদন করতে হবে। লক্ষ্মী যাতে আমাদের সংসারে চিরস্থায়ীভাবে থাকেন এবং আমাদের পরিবারকে সুখসমৃদ্ধি ও ধন-ধান্যে পরিপূর্ণ ও গচ্ছিত রাখেন, সেই আয়োজন আমাদেরকেই করতে হবে। হিন্দুশাস্ত্র মতে, প্রত্যেক বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী পূজা করার সময়ে কিছু রীতিনীতি পালন করতে হয় যাতে অভিমানী দেবী দয়াময়ী হোন ও এই গৃহের একজন হয়ে ওঠেন। প্রচলিত কিছু নিয়মকানুন অনুষ্ঠানের ধরন ও পথ অনুসরণ করুন দেখবেন দেবী প্রসন্ন হয়েছেন।

কি কি জিনিস নিবেদন করতে হবে চলুন জেনে নেইঃ

সুপারিঃ
লক্ষ্মীদেবীর পূজায় সুপারি বাধ্যতামূলক ব্যবহার করতে হবে। পান পাতার উপরে একটি সুপারি দিলে লক্ষ্মী দেবী খুবই প্রসন্ন হোন।

পান পাতাঃ
বেশিরভাগ পূজাতেই পান পাতা আবশ্যক। কিন্তু বিশেষ ভাবে লক্ষ্মী ও নারায়ণ পূজায় পান পাতার ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী। পান পাতা ব্যবহার করলে মা লক্ষ্মী খুবই প্রসন্ন হোন।

কলাপাতাঃ
মা লক্ষ্মীর প্রসাদ যদি কলাপাতার সামনে নিবেদন করা হয়, তা হলে দেবী এতটাই খুশি হোন যে, আজীবন সে বাড়িতে বসবাস করেন।

আমপাতাঃ
প্রতি বৃহস্পতিবার মা লক্ষ্মীর মাটির ঘটের উপর আমপাতা রেখে পূজা করতে হবে। প্রতি বৃহস্পতিবার পুরোনো আমপাতা সরিয়ে নতুন আমপাতা ঘটের উপর রাখতে হবে ও পুরো সপ্তাহে সেই ঘটে পূজা নিবেদন করতে হবে।

বেলপাতাঃ
লক্ষ্মী দেবীর প্রিয় জিনিসের মধ্যে বেলপাতা একটি। যদি মা লক্ষ্মীকে বেলপাতা নিবেদন করা হয়, তা হলে তিনি খুব প্রসন্ন হোন। তবে খেয়াল রাখতে হবে তিনটা পাতা যেন সম্পূর্ণ থাকে কোনভাবে যাতে ছিঁড়ে না থাকে।

কড়ি ও শঙ্খঃ
লক্ষীর সিংহাসনে কড়ি ও শঙ্খ রাখা বাড়ির মঙ্গলের জন্য খুবই শুভ বলে মনে করা হয়।
লক্ষ্মী পূজার কিছু রীতিনীতি রয়েছে। এর অন্যথা হলে দেবীর রুষ্ট হোন। লক্ষ্মী পূজার সময় ঘন্টা বাজানো নিষেধ। পূজার সময় তুলসি পাতা অর্পণ করা যাবে না। কিন্তু নারায়ণের পায়ে তুলসি পাতা নিবেদন করতে পারেন। এতে নারায়ণ প্রসন্ন হোন। লক্ষ্মী পূজার সময় আল্পনা আঁকা বাধ্যতামূলক। আল্পনাতে লক্ষীর পায়ের ছাপ আঁকতে হয়। লক্ষীর দেবীর ঘটের পাশেই তাঁহার পা আঁকতে হয়। ভোরে উঠে স্নান করে শুদ্ধ ও পবিত্র বস্ত্রে পূজা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। পূজা সম্পন্ন করে লক্ষ্মীর পাঁচালী পড়তে হয়। স্টিলের বাসনপত্র ব্যবহার করা যাবে না। সম্ভব হলে পিতল,কাঁসা,তামার বাসন ব‍্যবহার করা উত্তম। এইসব নিয়মকানুন মেনে চললে দেবী খুবই প্রসন্ন হবেন।

দুর্বাঃ
“মা লক্ষ্মীকে” খুশি করতে তাঁহার পূজায় অবশ্যই দুর্বা ঘাস ব্যবহার করা অপরিহার্য।

ঘিয়ের বাতি বা প্রদীপঃ
প্রত্যেকদিন “মা লক্ষ্মীর” বিগ্রহ বা চিত্রপটের সামনে দুইটি ঘিয়ের বাতি বা প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করা খুবই শুভ লক্ষণ। এর সাথে পদ্ম, নারকেল নাড়ু ও ক্ষীরের প্রসাদ নিবেদন করলে দেবী অত্যন্ত প্রসন্ন বা খুশি হোন।

 

আরো আপডেট পেতে

Bangla Panjika 2023 Paji 1430 Download করুন

For Bangla Calendar, Bangla Panjika, Bengali Calendar, Horoscope download Bangla Panjika 2023 Paji 1430

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.