মহারাজ যুধিষ্ঠর শ্রীকৃষ্ণকে বললেন – হে কৃষ্ণ ! জৈষ্ঠ্য মাসের কৃক্ষপক্ষীয়া একাদশীর নাম কি এবং তার মাহাত্ম্যই বা কি, আমি শুনতে ইচ্ছা করি। আপনি অনুগ্রহ করে তা বর্ণনা করুন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন হে- মহারাজ! মানুষের মঙ্গলের জন্য আপনি খুব ভাল প্রশ্ন করেছেন। বহু পুণ্য প্রদানকারী মহাপাপ বিনাশকারী এবং পুত্র দানকারী এই একাদশী অপরা নামে খ্যাত। এই ব্রত পালনকারী ব্যাক্তি জগতে প্রসিদ্ধ লাভ করে। ব্রহ্মহত্যা, গোহত্যা, ভ্রনহত্যা, পরনিন্দা, পরস্ত্রীগমন, মিথ্যাভাষন, প্রভৃতি গুরুতর পাপ এই ব্রত পালনে নষ্ট হয়ে যায়। যারা মিথ্যা সাক্ষ্যদান করে, ওজন বিষয়ে ছলনা করে, শাস্ত্রের মিথ্যা ব্যাখ্যা প্রদান করে, জ্যোতিষিদের মিথ্যা গনন ও মিথ্যা চিকিৎসায় রত থাকে, তারা সকলেই নরক যন্ত্রনা ভোগ করে। এসমস্ত ব্যক্তিরাও যদি এ ব্রত পালন করে , তবে তার সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়।
ক্ষত্রিয় যদি স্বধর্ম ত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়, তবে সে ঘোরতর নরকগামী হয়। কিন্তু সেও যদি এই ব্রত পালনে মুক্ত হয়ে স্বর্গগতি লাভ করে। মকররাশিতে সূর্য অবস্থানকোলে মাঘ মাসে প্রয়ানস্নানে যে ফল লাভ হয়; শবিরাত্রিত্রে কাশিধামে উপবাস করলে যে পুণ্য হয়। গয়াধামে বিষ্ণুপাদপদ্মে পিন্ডদানে যে ফল পাওয়া যায়; সিংহরাশিতে বৃহস্পতির অবস্থানে গৌতম নদীতে স্নানে , কুম্ভে কেদারনাথ দর্শনে, বদরিকাশ্রম যাত্রায় ও বদ্রীনারায়ন সেবায়, সূর্যগ্রহনে কুরুক্ষেত্র স্নানে, হাতি, গোরা স্বর্ণ দানে এবং দক্ষিনাসহ যজ্ঞ সম্পাদনে যে ফল লাভ হয়,এই ব্রত পালন করলে অনায়াসে সই সকল ফল লাভ হয়ে থাকে।
এই অপরা ব্রত পাপরূপ বৃক্ষের কুঠার স্বরূপ, পাপরূপ কাষ্ঠের দাবাগ্নির মতো, পাপরূপ অন্ধকারের সূর্যসদৃশ এবং পাপহস্তির সিংহস্বরূপ। এই ব্রত পালন না করে যে ব্যাক্তি জীবন ধারন করে জলে বুদবুদের মতো তাদের জন্মমৃত্যু কেবল সার হয়। অপরা একাদশীতে উপবাস করে বিষ্ণুপূজা কররে সর্বপাপ মুক্ত হয়ে বিষ্ণুলোকে গতি হয়। এই ব্রত কথা পাঠ ওশ্রবন করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয়। ব্রহ্মান্ডপুরাণ এই ব্রত মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে।
ইতি অপরা একাদশী ব্রত কথা সমাপ্ত